ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের মুলাডুলি গ্রামে ফলন্ত শিম, ভেন্ডিসহ এক হাজার বিঘা আবাদী জমির সবজি এখন পানির নিচে। বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের একমাত্র পথটি স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা তার পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়া বন্ধ করতে বাঁধ তৈরী করে পানি আবদ্ধ করে রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ের প্রবল বর্ষণের এক সপ্তাহ পার হলেও জলাবদ্ধতা রয়েছে আগের মতোই। 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তারের নিকট লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। কৃষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে সরজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রওশন জামাল।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, মুলাডুলি গ্রামটি মূলত সবজি আবাদের জন্য প্রসদ্ধি। এখানকার প্রধান অর্থকরী ফসল শিম ও ভেন্ডি। প্রতিবছর শিম ও ভেন্ডি আবাদ করে এখানকার কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হয়। এবছরও কৃষকরা ভেন্ডি আবাদের পাশাপাশি শিমের আবাদ করেছে। শিম ও ভেন্ডি কৃষকরা রীতিমত জমি থেকে তুলে বিক্রি করছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে টানা বর্ষণের সময় মুলাডুলি গ্রামের এক হাজার বিঘা সবজির জমি পানিতে তলিয়ে যায়।

বিগত ৫০ বছরেও এখানে এমন জলাবদ্ধতা হয়নি। মৎস্য হাবিব মুলাডুলি স্টেশনের পাশে আটঘরিয়া পাড়ার একটি সেতুর নিচে বাঁধ দিয়ে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছে ফলে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ইতিপূর্বে বর্ষাগুলোতে এই ব্রীজের নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে কমলা নদীতে পড়তো। ফলে কখনই এখানে জলাবদ্ধতা হয়নি বলে তিনি জানান।

কৃষক বাবু জানান, তাঁর মাঠে ৮ বিঘা জমিতে শিম রয়েছে। এই শিমের গাছ এখন আর জীবিত আছে বলে মনে হয় না। প্রায় ১০/১২ দিন হলো এখানে পানি জমে আছে। এতে চলতি মৌসুমে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হলো। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া আর সম্ভব নয় বলে তিনি জানান। প্রভাবশালীদের কাছে কৃষকরা খুবই অসহায়। তারা সেতুর নিচে বাঁধ না দিলে এমন ক্ষতি হতো না।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রওশন জামালের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাঁকে বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলেছেন। আমি তাঁর নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করছি।

(এসকেকে/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০১৭)