স্টাফ রিপোর্টার : নিখোঁজের ৩৬ ঘণ্টা পেরিযে গেলেও এখনও খোঁজ মেলেনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুবাশ্বার হাসান সিজারের। র‌্যাব-পুলিশ বলছে, তাদের পক্ষ থেকে সিজারকে উঠিয়ে নেয়া হয়নি। তিনি কারও দ্বারা অপহৃত হতে পারেন। শিক্ষক সিজারের সন্ধানে মাঠে নেমেছেন তারা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বুধবার ঢাকা ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্রাব) এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘কোনো নিখোঁজই কাম্য নয়, সিজার নামে শিক্ষক নিখোঁজ হয়ে থাকলে তাকে খুঁজে বের করা হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট বাহিনী কাজ করছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সিজার।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মুবাশ্বার হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করেন। এক সময় সাংবাদিকতাও করেছেন তিনি। পরে যুক্তরাজ্যে মাস্টার্স ও অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডি করেন মুবাশ্বার। সিজার সমাজে জঙ্গিবাদের বিস্তার নিয়ে গবেষণা করছিলেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, নর্থ সাউথের নিখোঁজ শিক্ষক সিজারের শেষ অবস্থান ছিল আগারগাঁওয়ে। গত ৭ নভেম্বর সকাল ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের বাসা থেকে বের হন তিনি। সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল সিজারের অবস্থান। এরপর বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর আগারগাঁও এলাকার আইডিবি ভবন ও বেগম রোকেয়া স্মরণীর লায়েন্স ভবনে অবস্থান করছিলেন তিনি। তার মোবাইলে সর্বশেষ কল আসে সন্ধ্যা ৬টা ৪১ মিনিটে। এরপর ৬টা ৪৫ মিনিটে মোবাইল ফোনটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।

jagonews24

এ বিষয়ে ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার বাবা মোতাহার হোসেন খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি নম্বর-৪৭১। মঙ্গলবার রাতে মুবাশ্বারের বাবা মোতাহার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে মোবাইল ফোনে মুবাশ্বারের সঙ্গে কথা হয়। বাকি কিছু কাজ সেরে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে বাসায় ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু সন্ধ্যা ৭ টার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাত ১১টা পর্যন্ত অপেক্ষার পর থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি জিডি করি। ছেলে নিখোঁজের বিষয়টি র‌্যাবকেও অবগত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মুবাশ্বারের চাচা মঞ্জুর হোসেন জানান, শিক্ষকতার পাশাপাশি ‘সমাজে জঙ্গিবাদের বিস্তার’ নিয়ে গবেষণা করছিলেন সিজার। সাদাসিধে জীবনযাপন করে আসছিল সিজার। এক মাস আগে মুবাশ্বার হাসানের ছাত্র পরিচয় দিয়ে তার বাসায় কেউ একজন খোঁজ করেছিলেন। এরপর ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মো. ইমরানুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, নিখোঁজ শিক্ষক সিজারের বাবা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্তের পাশাপাশি তার অবস্থান শনাক্ত করে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। র‌্যাবের পক্ষ থেকে তাকে উঠিয়ে নেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ তাকে তুলে নিয়ে গেছে, এমন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। সিজারকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তার ফোন কল ডিটেইল রেকর্ড (সিডিআর) অনুযায়ী তার অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। ফেসবুক অ্যাকাউন্টও আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। এখন পর্যন্ত তার অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০১৭)