টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : শিক্ষা বোর্ডের নীতিমালা তোয়াক্কা না করে  টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। সরকার বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ১ হাজার ৫৫০ টাকা ও ব্যবসা ও মানাবিক শাখার জন্য ১ হাজর ৩৭০ টাকা নির্ধারণ করলে এ স্কুলে ৪ হাজার ৫শত টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার ৫শত টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে মুখচেনা প্রভাবশালীদের নিকট থেকে ২ হাজার ৫ শত টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার ৫শত টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, অফিস কক্ষের সামনে শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। কক্ষে ভিতরে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এর কথা জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক মনছুরুল হক স্বপন বলেন তারা অফিসের বাহিরে আছে।

ফরম পূরণের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা ২ হাজার ৫ শত টাকা করে নেই। তিনি জানান, মিলাদ ফি ১০০, সরস্বতী পূজা ফি ১০০ টাকা নিয়ে থাকি।

কক্ষের বাহিরে আসলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলে এবার ফরম পূরণ ৫ হাজার থেকে শুরু করে সাড়ে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। আমি সাড়ে ৬ হাজার টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করেছি। অপর এক ছাত্রী বলেন, আমি সাড়ে ৬ হাজার টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করেছি।

নাম প্রকাশে কয়েকজন অবিভাবক বলেন, শিক্ষকেরা পরিকল্পিতভাবে এসএসসি টেস্ট পরীক্ষার রসায়ন, গনিত ও হিসাব বিজ্ঞানে অকৃতকার্য করে প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট হতে সাড়ে ৬ হাজার টাকা করে নিচ্ছে। কোন অবিভাকের অনুরোধও মানেন না শিক্ষকেরা। শিক্ষকেরা সরকারের নিয়মনীতি নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

এ বিষয়ে এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নাজমুল করিম এর সাথে মুঠোফোনে দুই যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন করা হবে। তিনি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য জোড় দাবি জানান এই প্রতিবেদককে।

এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। জানার পরে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহন করবো।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফরম পূরণে প্রতি পত্রের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা।

প্রতি পত্রের ব্যবহারিক ফি ৩০ টাকা, শিক্ষার্থীপ্রতি ট্রান্সক্রিপ্ট ফি ৩৫ টাকা, মূল সনদ ফি ১০০ টাকা, স্কাউট ও গার্লস গাইড ফি ১৫ টাকা, শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫ টাকা এবং বার্ষিক ক্রীড়া অ্যাফিলিয়েশন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা।

ব্যবহারিক নেই এমন শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র ফি ২৫০ টাকা এবং যাদের ব্যবহারিক আছে তাদের ফি ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ১০০ টাকা ফি দিতে হবে। ফলে সব মিলিয়ে একজন নিয়মিত শিক্ষার্থীকে (বিজ্ঞান বিভাগ) ফরম পূরণে ফি দিতে হবে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫৫০ টাকা।

(আরকেপি/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০১৭)