প্রবীর সিকদার      

রংপুরের গঙ্গাচরার ঠাকুরপাড়া গ্রামে ফালতু ইস্যু নিয়ে বেশ কয়েকটি হিন্দু বাড়িতে হামলা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর আবার আলোচনায় এসেছে দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গটি। সেই আলোচনা গড়াচ্ছে সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িকতার নানা বিশ্লেষণের দিকে। আর আমি বলি, সহজ একটি বিষয় নিয়ে এতো গবেষণার কি আছে! সেই সাথে আমি বলি আমার মতো করেই নানা কথা, হয়তো কথার কথা বাজে কথা! শুনবেন কেউ আমার সেই বাজে কথা? তবে শুনুন।

সুযোগ পেলেই হিন্দু বাড়িতে হামলা লুটপাট অগ্নিসংযোগের মতো অমানবিক ঘটনা ঘটছে কিংবা ঘটানো হচ্ছেই। এ আর এমন কি নতুন! একের পর এক নানা ঘটনার পরও আমি যে কথাটি স্পষ্ট করে সব সময় বলি, সেটা হল, বাংলাদেশে কোনও সাম্প্রদায়িক সমস্যা নেই। যেটা আছে সেটা হল, সাম্প্রদায়িকতার নামে দেশে চালু রয়েছে ভয়ঙ্কর এক লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যবসার মূলধন সবল ও দুর্বলের ক্ষমতা-অক্ষমতা। আর এই ব্যবসার ভিত্তি হল, বিচারহীনতা। আমি যদি কয়েকদিন একটি হিন্দু বাড়িতে গভীর রাতে বড় বড় ঢিল ছুঁড়লেই ওই হিন্দু পরিবারের জমি-বাড়ি পানির দরে কিনে নিতে পারি; তার জন্য আমাকে কখনো আইনী ঝামেলা পোহাতে হয় না, তাহলে আমি কেন ওই হিন্দু বাড়িতে ঢিল ছুঁড়বো না? যখন আমি ঢিল ছুঁড়ার মতো হিন্দু বাড়ি খুঁজে পাবো না, তখন আমি সম্পদ আছে কিংবা আছে লোভনীয় নারী, এমন দুর্বল মুসলমানের বাড়িতে ঢিল ছুঁড়বো, ছুঁড়বোই। দুর্বলের সম্পদ কিংবা নারীর প্রতি লোভী মানুষের এই আগ্রাসন চিরন্তন! এই অপকর্মের জন্য যতদিন আইন-বিচার-রাষ্ট্র আমাকে হাতকড়া পরাতে ব্যর্থ হবে, ততদিন আমি এমন অপকর্ম করবোই। আপনি আমাকে হাতকড়া পরাবেন, তেমন সাহস আপনার নেই! কেননা আপনি বিনা বাধায় বিনা বিচারে রাষ্ট্রের সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছেন ও খাবেন; ওমন করে খেতে লোভ হয় আমারও! কিন্তু আমার সেই ক্ষমতা নেই। আমি কি করবো, আমি যা পারি তাই করবো! আমি সুযোগ পেলেই আমার চেয়ে দুর্বল হিন্দু কিংবা দুর্বল মুসলমানের সম্পদ গ্রাস করবো, গ্রাস করবোই; সেটা না করতে পারলে আমি যে আপনার যোগ্য উত্তরসূরি হতে পারি না! আপনি কিংবা আপনার রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমাকে ঠেকাবে? আমি উন্মুক্ত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলাম, ক্ষমতা থাকলে আমাকে ঠেকান!