সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলার তালা থানাধীন কাশিয়াডাঙা গ্রামের মৃত উজির আলী খাঁ’র ছেলে আবুল খায়ের খাঁ। বয়স পঁয়ষট্টির উর্দ্ধে। আপিল মামলায় সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালত নিম্ন আদালতে সাজা বহাল রাখায় আত্মসমর্পনের জন্য অন্য সাতজন আসামীর সঙ্গে তাকেও আনা হয় আদালতে।

সহযোগী আসামি ও স্বজনরা যেভাবে তাকে আদালতের কাঠগড়ায় নিয়ে যাচ্ছিলেন তাতে বোঝাই যাচ্ছিল না যে তিনি জীবিত না মৃত।

তার পক্ষে আইনজীবী জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. মোঃ নিজামউদ্দিন জানান, ১৯৯৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সকালে তালা থানাধীন কাশিয়াডাঙা গ্রামে বিরোধপূর্ণ জমিতে চাষকাজে বাধা দেওয়ায় জিয়ারুল মোড়ল, খালেক মোড়ল ও মোক্তার গাজী নামের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করার অভিযোগে ওই গ্রামের নজর আলী মোড়ল বাদি হয়ে আবুল খায়ের খাঁসহ আটজনের নামে ১৭ ডিসেম্বর তালা থানায় মামলা (জিআর-১৬২/৯৩, তালা) দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা তালা থানার উপপরিদর্শক খন্দকার নজরুল ইসলাম ১৯৯৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আবুল খায়ের খাঁসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আটজন সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা শেষে ১৯৯৫ সালের ১২ আগষ্ট অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সকল আসামীদের পাঁচ বছর থেকে নয় মাস পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন(টিআর-২০/৯৪)। এর মধ্যে আবুল খায়েরকে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪৪৭ ধারায় তিন মাস ও ৩২৩ ধারায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করলে চলতি বছরের ৯ অক্টোবর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আব্দুল হামিদ নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। সে অনুযায়ি এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার জন্য আইন অনুযায়ি আটজন আসামীকে সোমবার সাতক্ষীরার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করানো হয়। শারীরিক অবস্থা থেকে মৃতপ্রায় আবুল খালে খাঁকে জামিন দিয়ে বাকীদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক এমএ জাহিদ।

সোমবার দুপুরে তাকে আদালত থেকে বের করে আনার সময় পুলিশ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের বলতে শোনা যায় ‘ আবুল খায়ের মরেও শান্তি পাবেন তো !’

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ১৪, ২০১৭)