টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : বিয়ের তথ্য গোপন রেখে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও একসময়ের তুখোড় ছাত্রদল কর্মী হয়েও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশ। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাজিব মোল্লাকে বহিস্কারের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাংশ।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিক্ষোভকারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বাধা প্রদান করে। পরে বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাদেরকে প্রটোকল দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যান। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংক্ষিপ্ত পথসভা করে। পথসভায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে নুরনবী হোসেন, দুরুল হুদা সাদ্দাম, গালিব আহমেদ, মো. ওমর ফারুক, নাজিম উদ্দিন, মানিক শীল বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগে বিবাহিত ব্যক্তিদের কোন জায়গা নেই। সাইদুর রহমান তার বিয়ের তথ্য গোপন করে পদের লোভে ছাত্রলীগের সাথে প্রতারণা করেছেন। রাজিব মোল্লা বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ট। তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইসবুকে) ওই নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন আখ্যায়িত করে সকল জনগণকে ভোট না দিতে প্রতিজ্ঞা করার আহ্বান জানান।

এসময় বক্তারা আরও বলেন, আমরা ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মীরা সাইদুর ও রাজিব মোল্লার মত বিবাহিত, মিথ্যাবাদী, প্রতারক, বেঈমান ও বিএনপির এজেন্টদের সংগঠনের নেতৃত্বে দেখতে চাই না। অবিলম্বে তাদেরকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মত গৌরব ও ঐতিহ্য বহনকারী সংগঠন থেকে বহিস্কার চাই।

অভিযোগের বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাজীব মোল্লা বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটা আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই করা হচ্ছে। যে স্কিন শর্ট ভাইরাল করা হয়েছে এটা এডিট করা। এখানে যে তথ্য গুলো দেওয়া তা সবই এডিট করে দিয়েছে।

বিএনপি-জামাত-শিবিরের কিছু নেতাকর্মী এ ঘটনা ঘটাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জানার পরই আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একাংশের বিক্ষোভ মিছিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরা কেউই ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নয়। তারা ছাত্রলীগও নয়।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনিত বিয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের নিয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্রের কিছু সদস্য এ ষড়যন্ত্রে নেমেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান ২০১৩ সালের ২০মে মাহ্ফুজা আক্তার রাখি নামে এক মেয়েকে টাঙ্গাইল নোটারী পাবলিকের সামনে হাজির হয়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দেন মোহর ধার্য করে বিয়ে করেন। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাজিব মোল্লা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইসবুকে) ওই নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন বলে আখ্যায়িত করে সকল জনগণকে ভোট না দিতে প্রতিজ্ঞা করার আহ্বান জানান।



(আরকেপি/এসপি/নভেম্বর ১৪, ২০১৭)