কামরুল হাসান ভূইয়া : ধান ভানতে শিবের গীত। সাংবাদিকতার রিপোর্টিং নিয়ে কথা বলা আমার শোভনীয় নয়। আমি ছাপোষা রাজনৈতিক কর্মী। বিবেকের অভিসংশন এবং অত্যুক্তি থেকে যাবে বলেই লিখছি। আপাদমস্তক একজন সাহসী কলম সৈনিক, প্রিয় সাংবাদিক সমরেন্দ্রদা'র প্রতি শ্রদ্ধা ভালবাসার কোন কমতি নেই।

ছাত্ররাজনীতির শুরু থেকে অদ্যাবদি লেখালেখির সাথে যুক্ত এই মানুষটিকে কখনো বিচ্যূত হতে দেখিনি। পেশাদারীত্বের প্রতি রয়েছে তার অগ্নিশপথ। কেন্দুয়ার নাগরিক সামাজিক সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রয়েছে তার অবাধ বিচরন। সংবাদপত্রের বিজ্ঞতায় ঋদ্ধ সজ্জন প্রানবন্ত একজন মানুষ। পেশাদারিত্বের কারণে বস্তনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে বিরাগ ভাজন চক্ষুশূল হতে হয়েছে। কিন্ত অন্যায় অসত্যের কাছে কখনো মাথা নত করেননি। এটি তার মজ্জাগত স্বভাব।

সম্প্রতি তার লেখা ‘কেন্দুয়ায় আওয়ামীলীগ দলীয় এমপি পিন্টুর জনসভা বয়কট করলেন উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতারা’ শিরোনামে সংবাদটি পুনশ্চ পড়ে আত্মস্হ করেছি। সত্য প্রকাশে আজকাল অনেক সাংবাদিক অনীহা প্রকাশ করে থাকেন। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে লেজুরবৃত্তি ও উৎকোচ নিতে তীর্থের কাকের মত হা করে থাকেন। হাতে গোনা দু একজনকে এর ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। সমরেন্দ্রদা এদেরই একজন। নিঃশন্ক সাহসী চিত্তের মানুষ জেনেই তার প্রতি অফুরান শ্রদ্ধা। বস্তনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের অপরাধে কথিত ক্যাডাররা প্রাননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে তাকে অনবরত। বিষয়টি আমাকে দারুণভাবে ব্যথিত করেছে। অথচ পুরো সংবাদ জুড়ে একটি শব্দ বাক্যও অসত্য বা অতিরন্জিত মনে হয়নি।

গতকাল ছিল যুবলীগের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রিয় সংগ্রামী প্রতিষ্ঠান যুবলীগের শুভ জন্মদিন উপলক্ষ্যে সারা বাংলাদেশের ন্যায় কেন্দুয়া উপজেলা যুবলীগ বর্ণাঢ্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করেছে। কেন্দুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিট থেকে ছুটে আসা শত শত কর্মীদের মাঝে ছিল প্রানোদ্দীপনা।

অথচ একই দিনে একই সময়ে মাননীয় সাংসদ পিন্টু নিজের জনবিচ্ছিন্নতা ঘোচাতে মাসকা বাজারে সভা ডেকে জনপ্রিয়তার ঢেকুর তুলেছেন। একটি সহযোগী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অন্যত্র সভা করা কতটা অযৌক্তিক, কতটা অরাজনৈতিক কতটা হটকারী সিদ্ধান্ত হতে পারে মাননীয় এমপি বিবেচনায় রাখেননি। যুবলীগের আলোচনা থেকে এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে
যুবলীগ নেতৃবৃন্দ।

দলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়া বিকৃত রাজনৈতিক দেওলিয়াপনার বহিপ্রকাশ।
আমাদের মত ছাই ফেলতে ভাঙা কুলাদের হীরক রাজার রাজত্ব আর কতকাল সইতে হবে? টাকাওয়ালা কারবারীরা ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মত মাঠ দখলের অসম প্রতিযোগীতায় নেমেছে আদাজল খেয়ে। দলীয় শৃংখলা আজ হুমকির সম্মুখীন।

সাংগঠনিক চেন অব কমান্ড মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ ও অগ্নিতে ঘৃতাহুতি দিয়ে ডাবল স্ট্যান্ডার্ডস গেম খেলে সুরসুরি দিয়ে যাচ্ছেন। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পকেট ভারী করছেন এসব কথিত জননেতারা। টাকার গরমে অনেকে জনসভা মঞ্চে ভুল পাল্টিয়ে অকথিত কথা বলে রাজনীতিকে বিপন্ন করে তুলেছেন। আওয়ামীলীগকে প্যারালাইজড করার ব্লু প্রিন্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নে সুচতুরভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন এসব কুশীলবরা। শুধু বয়কট নয় রাজনৈতিকভাবে এদের প্রতিহত করতে না পারলে কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগকে ভবিষ্যতে চরম মুল্য দিতে হবে বলে আমার বিশ্বাস।

সমরেন্দ্রদা, সত্য প্রকাশে আপনার অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। প্রতিশ্রুতিশীল মফস্বল সাংবাদিকতা হোক
আপনার মহান ব্রত সাধনা। মা মাটি মানুষের প্রতি মমতা ভালবাসা হোক পাথেয়। সত্য যে কঠিন, কঠিনেরেই ভালবাসিলাম।

কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মাকে প্রাণ নাশের হুমকি’র প্রতিক্রিয়ায় কামরুল ইসলাম ভূইয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন। লেখাটি ফেসবুক থেকে সংগৃহিত।

লেখক : সভাপতি, কেন্দুয়া পৌর আওআমীলীগ।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৫, ২০১৭)