বিশেষ প্রতিনিধি : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ অন্ততপক্ষে অর্ধশতাধিক তরুণ এবং নতুন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। সে লক্ষে প্রতিটি জেলায় সম্ভাব্য তরুণেরা জায়গা করে নিতে তৎপর বলে জানা গেছে।

আগামী সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে কক্সবাজারেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। জেলার ৪টি আসনে মনোনয়ন পেতে একাধিক তরুণ প্রার্থীসহ আওয়ামী লীগের অন্তত ২০ জন প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
এরমধ্য পর্যটননগরী কক্সবাজার জেলার ৪-আসনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন হলো কক্সবাজার সদর ও রামু-৩।

এ আসনেই রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আর পর্যটনখাত। তাই কক্সবাজারকে নিয়ে সরকারের রয়েছে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা।

ইতিমধ্যে সরকার কক্সবাজারে বেশ কিছু বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজও হাতে নিয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কক্সবাজার(৩) সদর -রামু আসন নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন ভাবনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বিএনপির দূর্গখ্যাত এই আসনে জনগণের ভোটে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিজয় অত্যন্ত কঠিন ভাবছে দলীয় হাই কমান্ড।

বিএনপি থেকে লুৎফর রহমান কাজল বিপুলভোটে অতীতে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এখনো বেশ জনপ্রিয় তিনি।

কাজলের জনপ্রিয়তা ভেদ করে সরকার দলীয় প্রার্থীকে জয় ছিনিয়ে আনতে হলে তারুন্যনির্ভর ও ক্লিন ইমেইজের গণমানুষের পছন্দের কাউকে মনোনয়ন দেয়ার কথা ভাবছে দল।

কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণ ও অসংখ্য আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ আসনে আওয়ামী-লীগের জয় পেতে হলে প্রার্থী পরিবর্তন ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই।
আর এইক্ষেত্রে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ইশতিয়াক আহমেদ জয় ই হতে পারে তুরুপের তাস।

তাই কক্সবাজার ৩ সদর ও রামু আসনে বিএনপির ভোট ব্যাংক ভাঙ্গতে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড পরিবর্তন চাচ্ছেন বলে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়।

আর কেন্দ্রীয় ভাবে তারুন্যনির্ভর প্রার্থীদের যাচাই বাঁচাই তালিকায় এ আসনে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়'কে বিবেচনায় রেখেছে বলে জানান আ:লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতা।ফলে সারা দেশের মতো কক্সবাজার-৩ আসনেও তরুণ নেতৃত্বের দিকে ঝুঁকছে দলীয় হাইকমান্ড।
সূত্রমতে, অতীতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ একসঙ্গে কক্সবাজারের চারটি আসনে বিজয়ী হতে পারেনি। এমনকি গত নির্বাচনেও চারটির মধ্যে একটি আসন হাতছাড়া করতে হয়।

কিন্তু আগামী নির্বাচনে কক্সবাজারের চারটি আসনই পেতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কক্সবাজার আ.লীগে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আবার নানান কারনে বিতর্কিত।

বিশেষ করে পর্যটননগরী সদর -রামু আসনে এই মুহুর্তে আলোচনায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাশেদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনিন সরওয়ার কাবেরী, রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল ও কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষ (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ ও ছাত্রনেতা ইশতিয়াক আহমেদ জয়।

এর মধ্যে বর্তমান সাংসদ কমলের পরিবার হতে তিন জন মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাই ঘরোয়া বিরোধের জেরে রাজনীতিতে সম্পূর্ণ তিনভাগে বিভক্ত রামুতে বর্তমান সাংসদ কমল নিজেকে তুলে ধরতে এবার সফল নাও হতে পারেন।

কেননা বিগত বছরগুলোতে খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মানে অনিয়মের অভিযোগে পিএম কার্যালয় হতে তদন্ত আসা,গত ২০শে জুলাই জেলাপ্রশাসক সম্মেলন কক্ষে সাবেক জেলা আ:লীগের সা:সম্পাদক সালাহ্ আহমেদ সিআইপির সাথে বর্তমান এমপির হাতাহাতি,হলমার্ক কেলেংকারী , জেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে সভাপতি জটিলতা, এছাড়াও চৌফলদন্ডিতে গান বাজনার নামে অসামাজিক অনুষ্ঠান।

জনগণ ও সরকারের উপরি মহলে সাংসদ কমল সম্পর্কে বিরুপ ধারণা জম্ম নিয়েছে বলেও ধারণা করাবর্তমান সংসদের মন্ত্রী এমপিদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নির্বাচনী এলাকা ও জনগণের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে কিংবা সংশ্লিট এলাকায় বির্তকিত হয়েছে নানা জামেলায়। সেসব আসনে আওয়ামী লীগ নতুনদের নিয়ে চিন্তা করছে।

গণমাধ্যম ও আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান ঝুঁকিপূর্ণ আসন গুলোতে নতুনদের প্রাধান্য দিতে।

তিনি দলের নীতি নির্ধারণী ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের বলেছেন, গ্রহণযোগ্য ও সম্ভাবনা রয়েছে এমন তরুণ যারা ছাত্রলীগসহ দলে ধারাবাহিকভাবে রাজনীতি করেছেন তাদেরকে উৎসাহী করতে।

গত আওয়ামীলীগ কাউন্সিলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। এরপর থেকে তরুণরা নির্বাচনী মাঠে সরব রয়েছেন।

যার ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার সদর আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ছাত্রনেতা ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের নাম বেশ জোরেশোরেই শুনা যাচ্ছে।


(জেজে/এসপি/নভেম্বর ১৭, ২০১৭)