রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের অপহৃত ছাত্রীকে অক্ষত উদ্ধারের দাবিতে আল্টিমেটামসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ দাবি জানানো হয়।

প্রেসব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাতটি দাবি উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে-অপহৃত ছাত্রীকে অক্ষত ফেরত, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, ছাত্রী হলের সামনে চেকপোস্ট, হল গেট ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ পথে সিসিটিভি ক্যামেরা, সান্ধ্য আইন বাতিল, সকল হলে অভিভাবক প্রবেশের অনুমতি এবং বিভাগগুলোকে তাদের শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করা।

এর আগে তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করেন। তবে কর্মসূচি পালনের জন্য পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী সকালে তাপসী রাবেয়া হল থেকে ছাত্রীরা বের হতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বাধার মুখে পড়ে।

এসময় তাপসী রাবেয়া হলের সামনে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা সাংবাদিকদের বলেন, ওই ছাত্রীর অবস্থান জানা গেছে। খুব তাড়াতাড়ি তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এর কিছুক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান তাপসী রাবেয়া হলে প্রবেশ করেন। অপহৃত ওই ছাত্রীকে দ্রুত ফেরত আনার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন।

এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুরু নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন নেতাকর্মী ওই হলের সামনে আসেন। পরে ওই হলের গেটে ধাক্কাধাক্কি ও স্লোগান দিতে থাকলে ছাত্রীদের বের হতে দেন প্রক্টর। সেখানে প্রায় দুইশত ছাত্রী বের হয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এসে মানববন্ধনে মিলিত হয়।

মানববন্ধন শেষে প্রেসবিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই ছাত্রীর সন্ধান পাওয়া গেছে বললেও ছাত্রীর পরিবারে সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তারা সন্ধান পায়নি। তাই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল তাদের দাবির বিষয়ে জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে যান।

মতিহার থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, ওই ছাত্রীর সন্ধানে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে ওই ছাত্রী স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা দেয়ার জন্য বের হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের সামনে রাস্তা থেকে মাইক্রোবাসে ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তিনি বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী। তাপসী রাবেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মাতাজি এলাকায়।

পরে ওই ছাত্রীর সন্ধান চেয়ে বিকেল ৪টা থেকে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সেটা স্থগিত করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় নগরীর মতিহার থানায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে অপহরণ মামলা করেন। মামলায় ওই ছাত্রীর সাবেক স্বামী সোহেল রানাসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়। পরে রাতে ওই ছাত্রীর শ্বশুর জয়নার আবেদীনকে নওগাঁর পত্নীতলা থেকে আটক করা হয়।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৮, ২০১৭)