স্টাফ রিরোর্টার : মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সরকারদলীয় ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) আমানুর রহমান খান রানার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী ছয় মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সেই সঙ্গে মামলার প্রতিদিনের শুনানিতে তাকে আদালতে হাজির করতেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এরআগে গত বৃহস্পতিবার রানার জামিনের বিষয়ে আসামি ও রাষ্ট্র উভয়পক্ষের শুনানি শেষ হয়। এরপর রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য ছিল।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান বলেন, আদালত রুল খারিজ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি ছয় মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার আদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়াও বিচারিক আদালতে মামলার বিচারকাজের প্রত্যেক দিনেই রানাকে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

রানার আইনজীবী রুশো মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্ট জামিন প্রশ্নে রুল খারিজ করে দিয়েছেন। ছয় মাসের মধ্যে মামলার বিচার শেষ করতে বলা হয়েছে। তা না হলে জামিন আবেদন করা হলে তা বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।

এর আগে ১৯ অক্টোবর রুলের ওপর শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজ রোববার দিন ধার্য করা হয়।

আদালতে সংসদ সদস্য রানার পক্ষে শুনানি করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন ও রুশো মোস্তাফা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান।

আগে কয়েক দফা ব্যর্থ হওয়ার পর চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল জামিন মেলে এমপি রানার। বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন।

এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল রানাকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে পাঠিয়ে একই দিন শুনানির দিন ধার্য করেন অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত।

এর আগে ১৬ এপ্রিল তিনদিনের জন্য জামিন স্থগিত করে ১৮ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন চেম্বার আদালত। পরে গত ৮ মে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ আবেদনটির শুনানি চারমাসের জন্য মুলতবি ও ছয়মাসের মধ্যে এ মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।

এরপর আপিল বিভাগে কয়েকদফা জামিন স্থগিত নিয়ে শুনানি মুলতবি করা হয়। গত ১৯ অক্টোবর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ জামিনের এ স্থগিতাদেশ চলমান রেখে ৪ সপ্তাহের মধ্যে রুল নিষ্পত্তির আদেশ দেন।

আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্য ফারুক আহমেদকে ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এমপি রানা গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান টাঙ্গাইলের বিচারিক আদালত।

বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। পরে আবারও জামিনের আবেদন জানালে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তা নামঞ্জুর করেন আদালত।

এ মামলায় গত ০৩ ফেব্রুয়ারি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। এরপর ৬ সেপ্টেম্বর দণ্ডবিধির ৩০২/ ১২০/৩৪ ধারায় সংসদ সদস্য রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন আদালত।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৯, ২০১৭)