রাজশাহী প্রতিনিধি : বিবাহবিচ্ছেদ ঠেকাতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের ছাত্রী শাহী উম্মে আম্মানা সোভাকে (২১) অপহরণ করে নিয়ে যান তার স্বামী। ঢাকায় নিয়ে তালাক প্রত্যাহারে তাকে কাজি অফিসেও নেন স্বামী সোহেল রানা। সেখান থেকেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েন সোহেল।

রবিবার নিজ দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রাজশাহী নগর পুলিশ কমিশনার মাহাবুবুর রহমান।

তিনি আরও জানান, ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন- ওই ছাত্রীর সাবেক স্বামী সোহেল রানা, সোহেলের বাবা জয়নাল আবেদীন এবং মাইক্রোবাসচালক জাহিদুল ইসলাম।

পুলিশ কমিশনার বলেন, এক বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। কিছু দিন আগে স্বামীকে তালাক দেন ওই ছাত্রী। বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার আগেই বিচ্ছেদ ঠেকাতে স্ত্রীকে শুক্রবার ক্যাম্পাস থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যান সোহেল রানা।

মাহাবুবুর রহমান জানান, উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য নগর পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করেছে। পুলিশ সদর দফতরের সহায়তায় মতিহার থানা পুলিশ ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার শেখেরটেক রায়েরবাজার এলাকার একটি কাজি অফিস থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। সেখান থেকে তার সাবেক স্বামী সোহেলকেও গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে, মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম জানান, মামলায় গ্রেফতারদের রোববার সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে নেয়া হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।

গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রী বিভাগীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তাপসী রাবেয়া হল থেকে বের হয়েছিলেন। হলের সামনে মাইক্রোবাস নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন তার সাবেক স্বামী সোহেল রানা।

সেখানে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাকে জোর করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান সোহেল ও তার সহযোগীরা। পরে ওই ছাত্রীর সন্ধান চেয়ে শুক্রবার বিকেল থেকে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ওই দিন সন্ধ্যায় মতিহার থানায় ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে অপহরণ মামলা করেন। মামলায় সোহেল রানাসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে রাতে ওই ছাত্রীর শ্বশুর জয়নাল আবেদীনকে নওগাঁর পত্নীতলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন নগরীর মতিহার থানার পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৯, ২০১৭)