মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ৭নং কামারচাক ইউনিয়নের খাসপ্রেমনগর গ্রামের দিনমজুর গফ্ফার মিয়ার মেয়ে রেহেনা বেগম (১৯) এর  বিয়ের সপ্ন ভঙ্গ হওয়ায় যৌতুকলোভী শশুরবাড়ীর লোকজনদের উপর অভিমান করে ঘরের ভিতরে ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার ১৮ নভেম্বর গফ্ফার মিয়া বাদী হয়ে রাজনগর থানায় বর রিপন বখত (২৮), যৌতুকলোভী শশুর চেরাখ বখত (৫২)সহ আরো ২/৩জনকে আসামী করে (মামলা নং- ১৩, তারিখঃ ১৮/১১/২০১৭ইং, ধারা-৩০৬) দায়ের করেন। 

যুবতীর আত্মহত্যার ঘটনার পর থেকেই নব বর রিপন বখত ও যৌতুকলোভী শশুর চেরাখ বখত বাড়ী ছেড়ে পালিয়েছে।

জানা গেছে, বিয়ের স্বপ্ন ভঙ্গ যুবতী রেহেনার বিয়ে আগামী ২৭ নভেম্বর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চেরাগ বখত এর পুত্র রিপন বখত (২৮) এর সাথে বিয়ের দিন তারিখ ধার্য ছিল। বিয়েতে আন্তীয়-স্বজনদের দাওয়াত, খাবারের জন্য গরু-ছাগল, কাঠ-ফালংসহ যাবতীয় মালামাল সহ কমিউনিটি সেন্টার বুকিং কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন করা হয়।

এদিকে গত ১৫ নভেম্বর রেহেনার শশুরালয় থেকে মেয়ের পরিবারের লোকজনদের ফোন দিয়ে জানানো হয় এ বিয়ে হবেনা, ১৬ নভেম্বর মেয়ের বাড়ীর লোকজন বিষয়টি যাচাই বাচাই করার জন্য চেরাগ বখত এর বাড়ীতে গিয়ে বিয়েটি অকারনে ভেঙ্গে না দেওয়ার অনুরুদ জানান।

এ সময় বর পক্ষের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- চেরাগ বখত, সিতার বখত, কুটি ও তাদের নিকট আন্তীয় মিরপুর গ্রামের আব্দুর রকিব। এ সময় বর পক্ষের লোকজন পুনরায় এ বিয়ে হবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেন। এ ঘটনায় যুবতী রেহেনা মর্মাহত হয়ে গত ১৬ নভেম্বর বিকাল ৫টায় গলায় ওড়না পেঁছিয়ে পরিবারের অজান্তে অভিমান করে আত্মহত্যা করে।

মৌলভীবাজার মডেল থানার এসআই তাপস সদর হাসপাতালে লাশের সুরতহাল রির্পোট তৈরি করে গত ১৭ নভেম্বর লাশ ময়না তদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

বিয়ের উকিল শাহনাজ বেগম, মিলাদ মিয়া ও তার মা আসমা বেগম জানান, ছেলে পক্ষের সম্মতিতেই এ বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। মেয়ের আংটির মাফও নেয়া হয়ে গেছে। বিয়ের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন শেষে ছেলের বাবা চেরাগ বখত ২লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করেন। মেয়ের দিন মজুর পিতার পক্ষে দাবীকৃত এ টাকা দেওয়া অসম্ভব ছিল। মেয়েটির বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় ও ছেলের পিতার দাবীকৃত টাকা দিতে না পারায় সে আত্মহত্যা করেছে।

রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক নির্মম এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তি প্রদক্ষেপ নেব। তিনি বলেন এঘটনায় অভিযোক্ত পিতা-পুত্রকে আটকের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।

(একে/এসপি/নভেম্বর ১৯, ২০১৭)