শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বাগেরহাট জেলা কারাগারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে নির্বাহী বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ৪ মাস অতিবাহিত হলেও বহাল তবিয়াতে রয়েছে ওই কারা কর্মকর্তারা। প্রতিবেদনে তৎকালিন বাগেরহাট সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পিযুষ চন্দ্র দে’র স্বাক্ষর জাল করে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির আশ্রয় নেয় তারা বলে উল্লেখ করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে জেলা কারাগারের সুপার গোলাম দস্তগীর, ডেপুটি জেলার মো. শেখ রাসেল, প্রধান কারারক্ষী মো. দেলোয়ার হোসেন ও শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কারাগারের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি প্রমানের তথ্য ও উপাত্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত করে গত ৫ জুলাই বাগেরহাট নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিন ৪২ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাসের নিকট দাখিল করেন। এর মধ্যে ডেপুটি জেলার মো. শেখ রাসেল রাজশাহী কারাগারে বদলি হয়ে যায়। তবে কারাগারে এখনও অনিয়ম কর্মকান্ড চলছে বহাল তবিয়াতে।

জানা গেছে, ওই তদন্ত প্রতিবেদনে কারাগারের মসজিদের অনুদানের ৫ মাসের টাকা জমা-খরচের খাতায় জমা না দিয়ে উত্তোলন করে নেয়। এছাড়া খোদ ষ্টাফদের কাছ থেকে মসজিদের নামে নেয়া অর্থও আত্মসাত করেন তারা। কারাগার অভ্যন্তরের ক্যান্টিনের জন্য প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা এবং বাহিরের ক্যান্টিন নেয়ার সময় ২০ হাজার টাকা করে সুপারকে দিতে হয়েছে।

কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. রাসেল তার অফিস কক্ষে টাকার বিনিময় হাজতিদের আত্মীয়স্বজনের সাথে সরাসরি স্বাক্ষাতের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া তিনি বাড়তি টাকা গ্রহণ করে কারা অভ্যান্তরে নগদ টাকা ঢোকার ব্যবস্থা করেন। কারাগারের প্রধান কারারক্ষী দেলোয়ার হোসেন ও শরিফুল ইসলাম ৯ মাসের বাসা ভাড়া কর্তন না করে অর্থ আত্মসাতের আশ্রায় নেয় এবং সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পিযুষ চন্দ্র দে’এর স্বাক্ষর জাল করে দূর্নীতির আশ্রায় নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারারক্ষীরা জানান, বাগেরহাট কারাগারের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে নির্বাহী বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদনর পর কারাগারের অভ্যান্তরিন তদন্ত শুরু হয়। তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করেন। ওই সময় অনিয়মের ঘটনার সত্যতা মেলে। তদন্ত চলাকালে অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্তদের তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা বসচা করেন।

এ বিষয়ে রবিবার দুপুরে কারা উপ মহা পরিদর্শক (খুলনা বিভাগ) টিপু সুলতান মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, বিভাগীয় তদন্ত চলছে দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বাগেরহাট জেলা কারাগারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনে র্শীষ সংবাদ হিসেবে প্রকাশ হলে সরকারের উচ্চমহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর র্শীষ মহওেরর নির্দেশে শুরু হয় নির্বাহী বিভাগীয় তদন্ত।

(এসএকে/এসপি/নভেম্বর ১৯, ২০১৭)