আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে জরুরি বৈঠকে বসার জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ৩৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থা। এসব সংস্থার মধ্যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও রয়েছে।

এসব আন্তর্জাতিক সংস্থা সোমবার রাতে লেখা এক চিঠিতে বলেছে, “আমরা জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের কাছে মিয়ানমারের ক্রম অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য অনতিবিলম্বে জরুরি বৈঠক ডাকার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।”

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের কাছে এমন সময় এ আহ্বান জানানো হলো যখন মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গত ১০ নভেম্বর মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর জাতিগত শুদ্ধি অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেন।

এ ছাড়া, জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী মার্ক লোকক সম্প্রতি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের পরিস্থিতিকে বিপর্যয়কর হিসেবে অভিহিত করে বলেন, মিয়ানমার সরকার সেদেশের রোহিঙ্গা মুসলমানদের কাছে ত্রাণসাহায্য পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে।

গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সেদেশের রাখাইন প্রদেশের মুসলমানদের ওপর ভয়াবহ গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে। বর্বরোচিত এই অভিযানে এ পর্যন্ত অন্তত ছয় হাজার রোহিঙ্গা নিহত ও কমপক্ষে আট হাজার লোক আহত হয়েছে। এ ছাড়া, এই পাশবিকতা থেকে প্রাণে রক্ষা পেতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ছয় লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান।

বিশ্বের বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ মিয়ানমার সরকারের বাধার কারণে সেদেশে ত্রাণ পাঠাতে না পেরে বাংলাদেশে সাহায্য পাঠিয়েছে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানও কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য অন্তত ১৩০ টন ত্রাণসাহায্য পাঠিয়েছে।

এ ছাড়া, ইরানের বিভিন্ন সংস্থা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য নগদ অর্থসাহায্যও পাঠিয়েছেন। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী তাঁর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য আড়াই লাখ ডলার অর্থসাহায্য প্রদান করেছেন।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ২১, ২০১৭)