মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : আগামী বছরের ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসের শেষ দিকে অর্থাৎ ২৫,২৬ ও ২৭ জানুয়ারী মৌলভীবাজারে শুরু হবে ধর্মপ্রাণ লাখো মানুষের অংশগ্রহণে আঞ্চলিক জেলা বিশ্ব ইজতেমা।

জেলা শহরের উপকন্ঠে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কোলঘেষে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে গণপূর্ত বিভাগের নির্মানাধিন প্রকল্প এলাকা উপশহরে প্রায় ৬০ একর জায়গার মধ্যে ২০ একর জায়গায় বিশাল চটের প্যান্ডেলে তিনদিন ব্যাপী প্রথমবারের মতো শুরু হবে এ অঞ্চলের তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহত গণজমায়েত।

দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণ, নিজেদের গুনাহ মাফ ও আল্লাহর নৈকঠ্য লাভের আশায় এই তিনদিন ধর্মপ্রান মুসলমানেরা জান ও মালের বিনিময়ে মহান মাবুদের দরবারে বিলিয়ে দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা তাবলিগ জামাত সংশ্লিষ্টদের।

সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় দুই পর্বে আগামী বছরের ১২,১৩,১৪ ও ১৯,২০,২১ জানুয়ারী দেশ- বিদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের অংশগ্রহণে টঙ্গির ঐতিহাসিক তুরাগতীরে শুরু হবে তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহত বিশ্ব ইজতেমা। তবে সেখানে মৌলভীবাজার জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেননা বলে জানা গেছে। দিনদিন বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই মূলত এ ব্যবস্থা। বিশ্ব ইজতেমা শেষ হলেই দেশব্যাপী দীনের দাওয়াতী কাজে তাবলিগ জামাতের হাজার হাজার মুসল্লি ছড়িয়ে পড়বেন দেশের নানা প্রান্তের বিভিন্ন এলাকায়। মৌলভীবাজারের আঞ্চলিক জেলা বিশ্ব ইজতেমায় জেলার মোট ৭টি উপজেলার অংশগ্রহনকারী মুসল্লিরা আলাদা আলাদা ৭টি খিত্তায় জামাতে অংশ নেবেন, এর বাহিরে বিশ্বের নানা দেশ থেকে মুসল্লিরা অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন তাবলিগ জমামাতের মুরব্বিরা।

মৌলভীবাজার জেলা তাবলিগ জামাতের নীতিনির্ধারনী ফোরাম মজলিশে শুরার এক সদস্য জানিয়েছেন, বুধবার ২২ নভেম্বর রাতে ইজতেমা এলাকার পাশের একটি মসজিদে ইজতেমা বাস্তবায়নের লক্ষে জেলা তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বিদের অংশগ্রহনে মতবিনিময় সভা হবে, সেখানে আঞ্চলিক এই জেলা বিশ্ব ইজতেমাকে সার্বিকভাবে সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

জেলা তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি ও বর্ষিয়ান আমির সৈয়দ মাসুক আলী জানান, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইতি মধ্যেই মাঠের অনুমোদন পাওয়া গেছে। আমরা আশা করছি আগামী সাপ্তাহের প্রথম দিকে তিনদিন ব্যাপী আঞ্চলিক জেলা বিশ্ব ইজতেমা মাঠের কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হবে, এ লক্ষে স্বেচ্ছায় শ্রম দিতে জগন্নাথপুর গ্রামের সাধারণ মানুষ সহ তাবলিগের শতশত স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত আছেন। তিনি বলেন প্রথমবারের মতো বিশাল এই দীনি আয়োজনে প্রশাসনের প্রতিটি বিভাগই আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাবলিগ জামাতের মুরব্বিদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে, আমরা ইজতেমার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরণের প্রস্তুতি নেবো।

তাবলিগ জামাতের শুরা সদস্য আব্দুল হাই বলেন, ইজতেমা মাঠে আগত ধর্মপ্রান মুসলমানদের সার্বিক ইবাদত বন্দেগিকে নির্ভিগ্ন করতে স্যানিটেশন, খাবার ও গোসলের পানি সহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, স্যানিটেশনের জন্য ইজতেমা মাঠের পাশের জমিতে প্রায় চারশো অস্থায়ী লেট্রিন বসানো হবে এবং বিশুদ্ধ পানির জন্য ৮টি গভীর নলকুপ ছাড়াও ঢাকা থেকে ৪০ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৪টি বড় পানির ট্যাংক ও ২০ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ১০টি পানির ট্যাংক আনা হবে।

তিনি আরো বলেন, ইজতেমার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ইতি মধ্যে জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপার সহ প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগযোগ হয়েছে, তাঁরা আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

(একে/এসপি/নভেম্বর ২২, ২০১৭)