স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার ১নং কুল্লাগড়া ইউনিয়নে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা বিদ্যুৎবিহীন গ্রাহকদের কাছ থেকে পল্লীবিদ্যুৎ ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের মাইজপাড়া, শশারপাড়, পলাশগড়া, ধানিপাড়া, ছনগড়া, বিপিনগজ্ঞ বাজার, বগাউড়া, মাধপুরসহ আশপাশের ৮টি গ্রাম থেকে প্রায় ৬শ গ্রাহকদের কাছ থেকে একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে প্রতিমিটার বাবদ ৩হাজার ৪ হাজারন টাকা করে উত্তোলন করেছে।

এদের মধ্যে অনেকের কাছ থেকে মিটার প্রতি এককালীন ২হাজার ৫শত টাকা,আবার মিটার প্রতি ১হাজার ৫শত টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাইজপাড়া ও ধানিপাড়ার দুই ডজনেরও বেশী ব্যক্তি বলেন এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার জন্যে অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছেন তাদের সরলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ভাবে ফায়দা লুটে নিচ্ছে বহেরাতলী গ্রামের আবুল হোসেন ছুট্টুর পুত্র মোঃ আলগীর কবীর নয়ন,সাইমন তজু, ইউপি সদস্য মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব, মাইজপাড়া গ্রামের মৃতঃ নুর হোসেনের পুত্র আবুল হোসেন, শশার পাড় এলাকার আঃ জব্বার খাঁ এর পুত্র আঃ রাজ্জাক সহ আরও অনেকে।

মাইজপাড়া গ্রামের এক গ্রাহক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাংবাদিকদের বলেন, ৩/৪ মাস আগে মাধবপুর, ধানিপাড়া, শশারপাড়, ছনগড়া, বিপিনগঞ্জ বাজার, বগাউড়া আদিবাসী এলাকার প্রায় ৪২০জন গ্রাহকের মধ্যে ২০০জনের কাছ থেকে ৩হাজার ৮ শত টাকা প্রতি গ্রাহক মিটার প্রতি নিয়েছে আর ২২০জন গ্রাহকের কাছ থেকে ২হাজার ৫শত টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্রটি।

উপজাতি এলাকায় শশারপাড় এলাকার ফজর আলীর পুত্র মীর হোসেন,একই গ্রামের গ্রামের রমজান আলীর পুত্র রইছ উদ্দিন,মোঃ চান্দু আলীর পুত্র মোঃ অলি, মোঃ কাসেম আলীর পুত্র ওয়াজেদ আলী প্রমুখের নেতৃত্বে অবৈধভাবে এ টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে বলে তারা জানান।

এসব এলাকার ভুক্তভোগীরা ৭/৮ মাস পূর্বেই এই টাকা নিয়েছেন বলেও স্থানীয়রা জানান। অনেককে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধমকি টাকা দেয়ার বিষয়টি কারও সাথে বললে তার বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না এমনকি তাকে দেখে নেওয়া হবে।

বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে অবৈধ ভাবে টাকা উত্তোলন প্রসঙ্গে দুর্গাপুর পল্লী বিদ্যুৎের ডিজিএম মকবুল হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, যারা টাকা তুলছেন তারা সমাজের শত্রু,বিদ্যুৎ পেতে কোন টাকা পয়সা লাগেনা। সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য একটি মহল কৌশলে বিদ্যুতের নামে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টাকা উত্তোলনকারীর মধ্যে একজন মেম্বার মোঃ হাবিবুর রহমান কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি এ বিষয়টি অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আলমগীর কবীর নয়ন’কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, বিদ্যুতের ব্যাপারে আমি কোন টাকা নেইনি।

এ বিষয়ে সাইমন তজুকে মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

কুল্লাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমাকে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে তা আমি শুনেছি বিষয়টি কোন ভাবেই কাম্য নয়। এত করে সরকারের ভাবমূর্তি নিঃসন্দেহে নষ্ট হচ্ছে। আমি কোন ভাবেই এটা সমর্থন করিনা। আমি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা যাচাই কওে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাবো।

(এনএস/এসপি/নভেম্বর ২৩, ২০১৭)