সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা সোলায়মানকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও তদন্তে অগ্রগতি নেই। ঘটনার পরদিন একজন আসামীকে গ্রেফতার ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালে কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের ঝায়ামারির বিলের ১০৭ বিঘা জমি নিয়ে কালিগঞ্জের নলতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান গাজীসহ ৪৪ জনের একটি গ্রুপে সঙ্গে ঝায়ামারি গ্রামের ওহাব পেয়াদাও তার শরীকদের বিরোধ রয়েছে।

মামলায় হেরে যাওয়ার পরও ২০ ঘর ভূমিহীন বসিয়ে ১০৭ বিঘা জমির মধ্যে প্রায় ৭০ বিঘা জমি দখলে রাখেন ওহাব পেয়াদা। এ নিয়ে ওহাব পেয়াদা কয়েকবার সোলায়মানকে হত্যারও হুমকি দেয়। গত ১৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্বস্ত কোন লোকের রাঙাশিশা ব্রীজের পাশে একটি চায়ের দোকান থেকে মোবাইল ফোন থেকে ডেকে নিয়ে রাতভর আটক রাখার পর সোমবার ভোর চারটার দিকে সোলায়মানকে আশাশুনির কৈখালি পানির ট্যাঙ্কির পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ি বাঁধের উপর জবাই করে হত্যা করা হয়।

পরদিন নিহতের ভাই সামিউল্লাহ বাদি হয়ে ওহাব আলী পেয়াদাসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। সোমবার রাতেই পুলিশ চিংড়িখালি থেকে আমিরুলকে গ্রেফতার করে। ২২ নভেম্বর তাকে এক দিনের রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গত বৃহষ্পতিবার কালিগঞ্জ সহকারি পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহদ্দন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপরও গত ১৩ দিনেও নতুন কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় নিহতের পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। তবে সোলায়মান হত্যার প্রতিবাদে আগামি সোমবার দুপুর ১২টায় সন্নাসীর চক স্কুল মাঠে এক সাংবাদিক সম্মেলন ও দোয়া মাহফিলের আলোযজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহতের ভাই আব্দুর রশীদ।

তবে স্থানীয় একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ নভেম্বর দুপুরে শহরতলীর বাঁকালে ডাঃ বাবলা’র বাগান বাড়িতে ওহাব আলী পেয়াদা, এক সাংসদের ভাই, ফুফাত ভাই, খুলনার দু’জন সন্ত্রাসী, তালার খলিলনগরের আব্দুল হালিম ও সাতক্ষীরা শহরতলীর বকচরার জমাত আলী মালীসহ কয়েকজন বৈঠক করেন। তারা বাবলা ডাক্তারের নামীয় পাস দিয়েই এন্ট্রি করে বাগান বাড়িতে ঢুকে বৈঠক করেন। সেখানে আলোচনা শেষে তারা দুপুরের খাওয়া শেষ করেন। ১৯ নভেম্বর বিকেলে ওহাব পেয়াদার ঝায়ামারির বাড়িতে এক গোপন বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওহাব আলী পেয়াদা, তার ভাই নরীম পেয়াদা, সেলিম পেয়াদা, হাবিবুল্লাহ, আব্দুল জলিল, ওহাব পেয়াদার ভগ্নিপতি রুহুল আমিন, তাদের ভাগ্নে জামসেদ, বিরোধপূর্ণ ঝামামারির মৌজার ডিএস রেকডীয় মালিক পক্ষের আব্দুল মালেক, ইয়াকুব আলী, মণ্টু ও খালেকসহ কয়েকজন। ওহাব আলী পেয়াদার পরিকল্পনা মত সলেমানকে হত্যা করা হয়েছে বলে সূত্রটি মনে করে।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক নয়ন কুমার চৌধুরী জানান, গ্রেফতারকৃত আমিরুলকে রিমাণ্ডে নিয়ে যে সব তথ্য পাওয়া গেছে তা যাঁচাই বাছাই চলছে। সন্ধিগ্ধ সকলের মোবাইল কললিষ্ট পাওয়ার পর এ হত্যার মোটিভ সম্পর্কে আরো কিছু তথ্যপাওয়া যাবে।

(আরকে/এসপি/ডিসেম্বর ০১, ২০১৭)