মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারে প্রেমনগর চাবাগানে অবৈধ যাত্রাপালা বন্ধ করে দিয়েছে চা বাগান কর্তৃপক্ষ । মঙ্গলবার (৫ডিসেম্বর) গভির রাতে প্রেমনগর চা বাগানের ম্যানেজার দেওয়ান বাহা উদ্দিন লিটন নিজে উপস্থিত হয়ে পুলিশের সহায়তা ছাড়াই বাগানের মন্দিরের পাশে গড়ে উঠা বিশাল যাত্রার প্যান্ডেল ও জোয়ার বোর্ড ভেঙ্গে দিলে মুহুর্তেই পন্ড হয়ে যায় অবৈধ এই আয়োজন।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগান পঞ্চায়েত কমিটির মধ্যে যাত্রার পক্ষে-বিপক্ষে দন্ধ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক চা শ্রমিক জানান, আমরা যাত্রার আড়ালে এই অবৈধ জোয়ার আসর বন্ধ চাই, এরকম যাত্রাপালা আমরা চাইনা, আমাদের ছেলে পেলেদের পরীক্ষায় ক্ষতি হোক সেটাও আমরা চাইনা।

সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসন ও চাবাগান কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি ছাড়াই মঙ্গলবার গভির রাত থেকে প্রেমনগর চাবাগান পঞ্চায়েত কমিটিকে ব্যবহার করে বস্তি এলাকার একটি সংঘবদ্ধ জোয়ারী চক্রের মদদে ও অন্যান্য প্রভাশালীদের সহায়তায় বাগানের ভিতরে নাচঘরে যাত্রার আড়ালে অশ্লিল নৃত্য ও জোয়ার আসর হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বাগান ম্যানেজার অভিযান চালিয়ে অবৈধ এই আয়োজন বন্ধ করে দেন।

মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রেমনগর চা বাগানের ম্যানেজার দেওয়ান বাহা উদ্দিন লিটন জানান, প্রশাসনের কোন অনুমতি ছাড়া এখানে যাত্রার নামে অবৈধ নৃত্য ও জোয়া আয়োজনের কোন সুযোগ নেই, তাই বন্ধ করে দিয়েছি।

অন্যদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল আহম্মদ জানান, আমরা খবর পেয়ে সাথে সাথে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি এবং যাত্রা বন্ধ করে দিয়েছি।

অন্যদিকে দেওয়ান বাহা উদ্দিন লিটন এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান, বস্তি এলাকার জোয়ারী সুরমান আলীর প্রত্যক্ষ মদদে গত কয়েকদিন যাবত এখানে যাত্রার নামে অশ্লিল নৃত্য ও জোয়ার আসর বসানোর চেষ্ঠা করা হচ্ছে, সে লক্ষে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সর্বাত্মক চেষ্টাও করে যাচ্ছে ঔ চক্রটি।

তিনি বলেন, যাত্রার জন্য ঢাকা থেকে শিল্পীদের ভাড়া করে এখানে এনে রাখা হয়েছে। অবশেষে কোন পক্ষের বৈধ অনুমতি না পেয়ে জোর পূর্বক মঙ্গলবার রাতে যাত্রা ও জোয়া শুরু করলে খবর পেয়ে প্রথমেই আমি মৌলভীবাজার মডেল থানাকে অবগত করলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি এর পর আমি নিজেই উপস্থিত হয়ে বন্ধ করে দেই।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন জেলার কোথাও যাত্রার কোন অনুমোদন দেয়া হচ্ছেনা, শুধু মাত্র ধর্মীয় কারণে কালিপূজার সময় দু’এক জায়গায় যাত্রার অনুমোদন দেয়া হয়, তবে কোন মতেই যাত্রার নামে জোয়া ও অশ্লিলতার কোন সুযোগ নেই ।

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ০৫, ২০১৭)