স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বনানীর জনশক্তি রপ্তানিকারক সিদ্দিকুর রহমান হত্যার তিন সপ্তাহ পর একজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। তার নাম হেলাল উদ্দিন। নিজেকে ছাত্রদলের ‘মধ্যম সারির নেতা’ পরিচয় দেয়া হেলাল ও তার পাঁচ সহযোগী এই খুন করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি জানায়, হেলাল তাদেরকে জানিয়েছেন, ইউরোপে অবস্থানকারী এক বন্ধুর কথায় তিনি এই খুন করেছেন। আর সেই নির্দেশদাতাও ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত। তবে কৌশলগত কারণে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।

বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের জঙ্গিবিরোধী বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

গত ১৪ নভেম্বর রাতে বনানী ‘বি’ ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১১৩ নম্বর বাড়িতে জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এমএস মুন্সি ওভারসিসে এজেন্সিতে খুন হন প্রতিষ্ঠানের মালিক সিদ্দিকুর রহমান। এই ঘটনায় বনানী থানায় হত্যা মামলার পর সেটি তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ।

মনিরুল জানান, মঙ্গলবার রাতে বাড্ডা কালাচাঁদপুর এলাকায় সন্ত্রাসীদের অবস্থান সম্পর্কে জেনে তারা সেখানে হানা দেন। আর গোলাগুলির এক পর্যায়ে ধরা পড়েন হেলাল উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন তিনি ছাত্রদলের মধ্যম সারির নেতা। তিনি ইউরোপে পলাতক এক ‘সন্ত্রাসী’র অনুরোধে সিদ্দিকুর রহমানের অফিসে ঢুকে তাকে গুলি করে হত্যা করেছেন। এর এক সপ্তাহ আগে প্রবাসী ওই ‘সন্ত্রাসী’ তাকে এই কাজের অনুরোধ করেছিলেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, ছয়জন এই হত্যায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সরাসরি খুনে জড়িত চার জন। হেলাল উদ্দিন বাইরে অবস্থান করে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন।

এই ছয় জনের সবাই পেশাদার খুনি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুই জনের পরিচয় শনাক্ত করার কথা জানানো হয়। এরা হলেন- পিচ্চি আল আমিন ও সাদ্দাম হোসেন। হেলালকে গ্রেপ্তারে অভিযানের সময় পিচ্চি আল আমিন সেখানে উপস্থিত থাকলেও তিনি ফসকে যান।

মনিরুল বলেন, যে ইউরোপ প্রবাসী ‘সন্ত্রাসী’র নির্দেশে হেলাল উদ্দিন এই খুন করেছেন তিনিও ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে কৌশলগত কারণে তার নাম পরিচয় জানাতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিদ্দিকুর রহমান হত্যায় ছয়টি অস্ত্র ব্যবহৃত হয়। যার মধ্যে পাঁচটি অস্ত্রই পুলিশ উদ্ধার করেছে।

হেলাল উদ্দিন রাজধানীর বাড্ডা ও গুলশান থানার একাধিক হত্যা মামলার আসামি। তার ইউরোপ প্রবাসী বন্ধুর বিরুদ্ধেও রাজধানীর একাধিক থানায় মামলা সন্ত্রাসের মামলা রয়েছে। আর এ কারণেই তিনি বিদেশে পালিয়ে যান বলেও জানান মনিরুল।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন, উত্তর বিভাগের গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, পূর্ব বিভাগের উপ কশিনার খোন্দকার নুরুন নবী, কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের উপকমিশনার মোদাচ্ছের হোসেন, এএইচএম আবদুর রাকিব এবং প্রলয় কুমার জোয়ারদার।

(ওএস/এসপি/ ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭)