দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা ৬দফা দাবিতে গতকাল বুধবার দুই ঘন্টাব্যাপী খনি এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। আগামী ৪৮ঘন্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে মানববন্ধন থেকে।

কয়লাখনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ১৩গ্রাম সমন্বয়ক কমিটির উদ্যোগে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত দুই ঘন্টাব্যাপী ফুলবাড়ি-বড়পুকুরিয়া সড়কের দুই পার্শ্বে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ও যুবক-যুবতিরা ৬দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে ফাটল ধরা ঘরবাড়ির উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো থেকে যোগ্যতা অনুসারে কয়লাখনিতে চাকরির ব্যবস্থা করা, চাকরির ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কোঠা প্রথা চালু করা, ফুলবাড়ী থেকে খয়েরপুকুরহাট ও চৌহাটি হয়ে ধূলা উদাল পর্যন্ত রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করা, বড়পুকুরিয়া বাজার সংলগ্ন রাস্তার বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করা, মসজিদ, কবরস্থান, ঈদগাহ মাঠসহ পূর্বে অধিগ্রহণকৃত ৬২৭ একর জমির সকল বকেয়া পরিশোধ করা, ২০০৭ সালের মে সরকার কর্তৃক নির্দেশিত পেট্রোবাংলা কয়লাখনি ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর মধ্যে স্বাক্ষরিত ১০দফা চুক্তি বাস্তবায়ন করা এবং আন্দোলনকারি নেতাকর্মী নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করা।

মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে দাবির সমর্থনে বক্তব্য রাখেন ক্ষতিগ্রস্ত ১৩ গ্রাম সমন্বয় কমিটির আহবায়ক মশিউর রহমান বুলবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা, আনোয়ারুল ইসলাম, লুৎফর রহমান, জাহিদুল ইসলাম রতন, আলী হোসেন, গোলজার হোসেন পান্না প্রমুখ।

ক্ষতিগ্রস্ত ১৩গ্রাম সমন্বয় কমিটির আহবায়ক মশিউর রহমান বলেন, খনিতে ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে ভূকম্পন ও ভূমি ধ্বসের কারণে খনি সংলগ্ন মোবারকপুর, বৈগ্রাম, কাশিয়াডাঙ্গা, রসুলপুর, কালুপাড়া, মহেশপুর, পাতরাপাড়া, বাঁশপুকুর, বৈদ্যনাথপুর, কাজিপাড়া, হামিদপুর, চৌহাটি ও জব্বরপাড়া গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরবাড়িতে ফাটলসহ মাটি ফেটে ও দেবে গেছে।

এতে ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পরেছেন গ্রামবাসী। ঘরবাড়িতে ফাটলের কারণে আতংক আর উৎকন্ঠার মধ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে গ্রামবাসিকে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতির বিষয় নিয়ে ক্ষতি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন নিবেদন করা হলেও তারা বিষয়টি কোন কর্ণপাত করছেন না। ফলে আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া দাবি আদায়ের বিকল্প পথ নেই এলাকাবাসী। তবে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন গ্রামবাসী।

(এসিজি/এসপি/ ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭)