স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথম থেকেই এমন সম্ভাবনার কথা বলে আসছেন অনেকে, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মধ্যে ফাইনালটা হোক। এখন যা অবস্থা, তাতে দুই ধাপ এগুতে পারলেই হবে স্বপ্নের ফাইনাল। ১৩ জুলাই রিও ডি জেনিরোর ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল। আগাম বলতেই কেমন শিহরণজাগা অনুভূতি খেলে যাচ্ছে সবার মনে। সত্যি সত্যিই হলে, তা হবে বিশ্বকাপ ফুটবলের এক অনন্য অধ্যায়। বিশ্ব ফুটবলের জনপ্রিয় দুদলের ফাইনাল, আহা যেই জিতুক; এমন রোমাঞ্চকর ম্যাচ অনেকদিন মনে থাকবে সবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কি হবে?

তবে ফাইনালে যেই আসুক, তা নিয়ে এখনই চিন্তার কোনো কারণ দেখছেন না আর্জেন্টিনার কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা। যে কোনো প্রতিপক্ষ মোকাবিলা করতে চান দৃঢ়চিত্তে। ভয়ের লেশমাত্র নেই তার তনুমনে। তবে ধাপে ধাপে এগুনোই তার প্রধান লক্ষ্য। সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে কষ্টার্জিত জয়ের পর সাবেলা বলেছেন, ‘আমাদের স্বপ্ন পরবর্তী ম্যাচে ভালো খেলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা। এ ছাড়া কোনো কিছু চিন্তা করার অবকাশ নেই।’ মাত্র দুটি ধাপ, তারপরই স্বপ্নের ফাইনাল। তখন শুধু একটি ধাপের বৈতরণী। পার হতে পারলেই বিশ্বজয়। সাবেলা তাই ছক কষছেন কঠিন চিন্তাভাবনা করেই।
১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালে দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। এরপর ম্যারাডোনার নেতৃত্বে আর্জেন্টিনা শুধু একবারই ফাইনাল খেলেছে ১৯৯০ সালে। তবে পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে হারই আর্জেন্টিনার এখন পর্যন্ত সেরা অর্জন। অর্থাত্ ঐ বিশ্বকাপের পর এখন পর্যন্ত ফাইনাল দূরে থাক, সেমিফাইনালই খেলা হয়নি ম্যারাডোনার উত্তরসূরিদের। এবার সেমিফাইনালের সেই আশাটা অন্তত পূরণ হতে পারে। কারণ কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম। খুব বড় কঠিন প্রতিপক্ষ নয়। কিন্তু সাবেলার মতে কোনো দলই দুর্বল নয়। তার মতে, এখন পর্যন্ত বিদায় নিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন, ইংল্যান্ড, উরুগুয়ে, ইতালি, পর্তুগালের মতো দলগুলো। যারা তাদের বিদায় করেছে, অবশ্যই তারা আরও শক্তিশালী। ফলে সামনে এখন যারাই আসবে, তাদের হালকা করে দেখার কোনো অবকাশই নেই।
পরশু রাতে সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার একমাত্র গোলে জয় পায় আর্জেন্টিনা। সাবেলার মতে, জয় পাওয়া উচিত ছিল নির্ধারিত সময়েই। তিনি বলেছেন, ‘নির্ধারিত ৯০ মিনিটের মধ্যেই জয় প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু হয়নি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা অনেক ভালো খেলেছি। এই অর্ধে পাঁচ থেকে ছয়টি গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিলাম আমরা। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলাতেও কয়েকটি সুযোগ এসেছিল। শেষ মুহূর্তে মারিয়াই উত্সবের উপলক্ষ বয়ে আনে। তবে আমরা শক্ত একটি দলের বিরুদ্ধে সুন্দর একটি ম্যাচ উপহার দিয়েছি।’
কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম। জিততে পারলে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ হিসেবে আসবে হল্যান্ড কিংবা কোস্টারিকা। অন্যদিকে ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে কলম্বিয়ার। জিততে পারলে সেমিতে তাদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ জার্মানি কিংবা ফ্রান্স। ধরে নেয়া যাক সেমিতে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ হল্যান্ড, ব্রাজিলের জার্মানি। লাতিন বনাম ইউরোপের লড়াই। দুই ইউরো শক্তিকে নাকাল করতে পারলে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ফাইনাল তো হচ্ছেই, নাকি?

(ওএস/এইচআর/জুলাই ০৩, ২০১৪)