উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা স্ব-স্ব মন্ত্রনালয়ের পরিপত্রে কর্মকর্তাদের নিজ কর্মস্থলে থাকার বিধান থাকলেও এ আইনকে তোয়াক্কা না করে বৃহস্পতিবার হলেই কর্মস্থল ত্যাগ করে চলে যান নিজ বাড়িতে । ফলে দুইদিন থাকে কর্মস্থল(মির্জাগঞ্জ) শূন্য। বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা বাজলেই কর্মকর্তারা বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

অফিসের অন্য কর্মচারীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন,স্যার মিটিংয়ে পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন কাজের কথা বলে এড়িয়ে যান এবং রবিবার তারা অফিসে ফিরছেন সকাল দশটা কিংবা এগারোটার সময়ে। ছুটির দুইদিনে সরকারি কোন প্রোগ্রাম থাকলে কর্মকতারা কর্মস্থলে থাকেন অন্যথায় তারা চলে যান নিজ বাড়িতে।

সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের শুরুতেই স্ব-স্ব মন্ত্রানালয়ে থেকে কর্মকর্তারা নিজ কর্মস্থলে থাকেন কিনা জানতে চাইলে তারা প্রত্যেকেই কর্মস্থলে থাকেন বলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে জবাব দেন। আবার অনেকেই নিজেদের নামে বরাদ্ধকৃত কোয়ার্টার নিজে না নিয়ে কর্মচারীদের নামে ব্যবহার করছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়,বৃহস্পতিবার হলেই উপজেলা প্রকৌশলী,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিসার তিন জনেই নিজ বাসা বরিশালে চলে যান। এরমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলী সপ্তাহে তিনদিন অফিস করেন না বলে ভুক্তভোগী ঠিকাদারগন জানান।

উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ও এআরডিও কর্মকর্তা চলে যান পটুয়াখালীতে। যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সরকারি মটরসাইকেল ও তৈল ব্যবহার করে পটুয়াখালীতে যাচ্ছেন এবং সরকারি মটরসাইকেল নিজ বাসায় রাখছেন।

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার চলে যান যশোর, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চলে যান ঢাকায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দুপুর বারোটা বাজার সাথে সাথেই অফিসের এমএলএসএস সরকারি মটোরসাইকেল যোগে বরিশাল কিংবা বাকেরগঞ্জ পৌছে দেন বাড়ি যাওয়ার উদ্যেশ্যে।

বিআরডিবি কর্মকর্তা ও সমবায় কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চলে যান বরগুনায়, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কর্মকর্তা চলে যান পিরোজপুরের রাজাপুরে।

এসব কর্মকর্তারা রবিবার কর্মস্থলে এসে অফিস করেন। অফিসে দেরিতে আসায় জনগনের আর দুর্ভোগের শেষ থাকে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, চাকুরীতে যোগদানের পর থেকেই কোথাও যেতে হলে নিজ নিজ দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে যেতে হবে। আর অনুমতি না পেলে নিজ কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেক কর্মকর্তাকে নিজ কর্মস্থলে থাকা উচিত। কর্মস্থল ত্যাগ করলেও তাদেরকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। তবে যারা এ অনিয়ম করছেন কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা হবে এবং বিষয়টি স্ব-স্ব উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

(ইউজি/এসপি/ডিসেম্বর ০৯, ২০১৭)