স্টাফ রিপোর্টার : চট্টগ্রাম ছাড়তে হবে বলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর পদ এমনকি মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

শুক্রবার চট্টগ্রামে গিয়ে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়রের প্রতি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা এই নেতা তার সাহস ও নিষ্ঠার জন্য নিজ জেলা ছাড়িয়ে পরিচিতি পেয়েছিলেন গোটা দেশেই। জনপ্রিয়তার জন্য তাকে সমীহ করতেই হতো। চাইলে তিনি রাজধানীতে এসেও রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পেতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা চাননি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দীর্ঘদিন দলের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও চট্টগ্রামের রাজনীতির বাইরে যেতে বরাবরই আগ্রহ ছিল না মহিউদ্দিন চৌধুরীর।’

'বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মহিউদ্দিন চৌধুরীকে মন্ত্রী হতে বলেছিলেন, তিনি রাজি হননি। আমাদের নেত্রী তাঁকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হতে বলেছিলেন, তিনি রাজি হননি। তিনি (মহিউদ্দিন) বলতেন, ‘আমার স্বপ্ন, আমার ধ্যান, আমার প্রাণ, আমার সবকিছুই হচ্ছে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের বাইরের নেতা হওয়ার আমার কোনো স্বপ্ন নেই’।'

‘বারবার নেত্রী তাঁকে বলেছেন, সেই অনুরোধ তিনি রাখেননি’- প্রয়াত নেতার স্মৃতিচারণ করে বলেন কাদের।

শুক্রবার সকালে ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রামে গিয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরীর চশমা হিলের বাসায় যান। এ সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানান। কিছু সময় তিনি সেখানে অবস্থান করেন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সান্তনা দেন।

শুক্রবার ভোরে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান বন্দরনগরীর প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনবার নির্বাচিত এই মেয়রের মৃত্যুতে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতির মৃত্যুর খবর পেয়ে দলীয় নেতাকর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হাসপাতাল ও তাঁর বাসায় ছুটে যান। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিএনপির নেতারাও যান। আসরের নামাজের পর নগরীর লালদীঘি ময়দানে জানাজা শেষে চশমা হিলের পারিবারিক কবরস্থানে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে দাফন করার কথা রয়েছে। তার আগে বাদ জুমা নগরীর দলীয় কার্যালয়ে মহিউদ্দিনের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানায় নগরবাসী।

১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহীরা গ্রামে জন্ম নেন এই মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র হন তিনি। এরপর আরও দুই দফা তিনি ভোটের লড়াইয়ে জিতেন।

(ওএস/অ/ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭)