স্টাফ রির্পোটার : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও উপাচার্য নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে টিআইবিকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদারের উত্থাপিত ‘নওগাঁ জেলায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হোক’ সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও উপাচার্য নিয়োগে কোনো দুর্নীতি হয়নি। তিনি বলেন, টিআইবি এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির যে অভিযোগ তুলেছে তা মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
তিনি বলেন, এই অভিযোগ যদি টিআইবি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে যেকোনো শাস্তি তার মন্ত্রণালয় মাথা পেতে নেবে। তা নাহলে অভিযোগটি প্রত্যাহার করে নিয়ে টিআইবিকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলেই যতো দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে এ বিষয়ে কোনো দুর্নীতি হয়নি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশে ৮৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দিয়েছে। ২০০৯ সালে যখন শেখ হাসিনার সরকার গঠিত হয়, তখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৫৬টি এবং প্রায় অধিকাংশই ছিল অচল।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে শিক্ষাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের নির্দেশ দেন। এর ফলে বর্তমানে অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব ক্যাম্পাস থেকে পরিচালিত হচ্ছে। নিজস্ব ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করতে অনেক প্রতিষ্ঠান জমিও ক্রয় করেছে।
তিনি বলেন, তবে কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা না করে সরকারের নির্দেশ অমান্য করায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালত থেকে সরকারের বন্ধ নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও প্রাচীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজশাহী বিভাগে আরো ৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাই আপাতত এই বিভাগের নওগাঁ জেলায় আরো একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন জরুরি নয়।
তিনি বলেন, তবে নওগাঁবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিবেচনা সরকারের রয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে নওগাঁয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নিলে সরকারের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা ও বাস্তবায়ন সহজতর হবে।
বৃহস্পতিবার সংসদে আরো দুটি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব নিস্পত্তি করা হয়। সিদ্ধান্ত প্রস্তাব দুটি উত্থাপন করেন আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদার ও জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ। প্রস্তাবের ওপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ বক্তব্য রাখেন।

(ওএস/এএস/জুলাই ০৩, ২০১৪)