স্টাফ রিপোর্টার : রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক) নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। সকালে ভোটার উপস্থিতি খুব একটা না থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দলে দলে ভোটার এসে নির্ধারিত কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সারাদিন এরকম পরিবেশেই ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন বলে আশা করছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।

নির্বাচনে ইতোমধ্যে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীরা। সকালে নগরীর গুপ্তপাড়াস্থ সালেমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট দেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। একই সময় নগরীর দেওয়ান টুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপির প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা। এরআগে সকালে নগরীর আলমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

ভোট উপলক্ষে রংপুরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া নগরীর বেগম রোকেয়া কলেজ নামের একটি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন বসানো হয়েছে। ওই কেন্দ্রসহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ এই তিনটি কেন্দ্রে রয়েছে সিসি ক্যামেরা।

রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, ১৯৩টির মধ্যে ১২৮টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনে ৩৬ প্লাটুন বিজিবি, ৫ হাজার পুলিশ, দুই হাজার ৭শ আনসার সদস্য, সিটির ৩৩টি ওয়ার্ডে ৩৩টি মোবাইল টিম এবং ৩৩টি র্যাবের টিম রয়েছে। এছাড়াও ১৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। পুরো এলাকায় বসানো হয়েছে ৮টি চেকপোস্ট।

এ সিটি কর্পোরেশনে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫৬ ও মহিলা ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৮ জন। সাতজন মেয়র প্রার্থীসহ সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১১ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৫টি জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচন। ওই সময় দলীয় প্রতীকে ভোট না হলেও সরফুদ্দিন আহম্মেদ ঝন্টু মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে এক লাখ ছয় হাজার ২৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি এবার নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের নির্দেশ অমান্য করে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে হাঁস প্রতীক নিয়ে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পেয়েছিলেন ৭৭ হাজার ৮০৫ ভোট। এবারের নির্বাচনে তিনি জাপার মনোনীত প্রার্থী হয়ে লাঙল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

এছাড়া বিএনপির কাওছার জামান বাবলা প্রথমবারের ওই নির্বাচনের আগের দিন রাতে ভোট বর্জনের পরও ২১ হাজার ২৩৫ ভোট পেয়েছিলেন।

হেভিওয়েট ওই তিন প্রার্থী ছাড়াও এবারের নির্বাচনে লড়ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু (হাতপাখা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি সেলিম আখতার (আম) বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) থেকে আব্দুল কুদ্দুস (মই) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি থেকে সদ্য বহিষ্কার হওয়া এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ (হাতি)। এছাড়াও ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১১ এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ২১, ২০১৭)