দীপক চক্রবর্তী, মাগুরা : মাগুরা শহরের ভায়নার মোড় এলাকায় বন্ধ করে দেয়া অনুমোদন বিহীন একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় বীথি কর্মকার নামে এক প্রসুতি মায়ের মৃত্যুর চারদিন অতিবাহিত হলেও আজও পুলিশ সংশ্লিষ্ট ক্লিনিকের মালিক ও ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি।

ঘটনার পর পরই ক্লিনিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রসূতরি মৃত্যুর পর শুক্রবার সকালে মাগুরা সদর থানায় ক্লিনিক মালিক শারমিন বেগম ও চিকিৎসক এনামুল কবিরসহ ৬ জনের নামে মামলা হয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর এ ক্লিনিকটিকে অনুমোদন ছাড়া রোগী ভর্তি, সিজারিয়ান অপারেশন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের দায়ে নগদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দিয়েছিল ভ্রাম্যমান আদালত। কিন্তু সম্প্রতি গোপনে ক্লিনিকটি খুলে আবার ব্যবসা শুরু করে মালিক শারমিন বেগম।

নিহতে বাবা বিষ্ণুপদ কর্মকার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন বৃহস্পতিবার রাতে মাগুরা শহরের ভায়নার মোড় এলাকায় শারমিন ক্লিনিকে ভর্তি হন শহরের কেশবমোড় এলাকার বিষ্ণুপদ কর্মকার এর প্রসুতি মেয়ে বীথি কর্মকার। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তার সন্তান প্রসব করার করানোর জন্য শারমিন ক্লিনিকে ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। এ সময়ে বীথি সুস্থ অবস্থায় একাই সিঁড়ি বেয়ে দুইতলায় ওঠেন এবং ক্লিনিকে অন্য রোগীদের সাথে হেসে হেসে কথা বলে ও দোয়া চায়।

ঘন্টা খানেক পর বীথিকে সিজার করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ইনজেকশান পুষ করলে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ অবহেলা করে ১ঘন্টা পর রোগীকে ফরিদপুর নেয়ার কথা বলে।

রোগীর স্বজনদের সন্দেহ হলে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালে নিলে রাত ১১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কৃষ্ণ দাস বিশ্বাস তাকে মৃত হিসেবে পান বলে জানান।

এ ঘটনায় রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা ক্লিনিকের সামনে বিক্ষোভ করলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিনি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ব্যাপারে সদর থানায় একেটি মাামলা হয়েছে।

মাগুরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মাহবুর রহমান জানান, নিহতের বাবা বিষ্ণুপদ কর্মকার বাদি হয়ে ক্লিনিকের মালিক শারমিন বেগম, ডা. এনামুল কবির ও ওয়ার্ডবয় রাজু আহমেদসহ অজ্ঞাত ৩ জনের নামে আজ শুক্রবার সকালে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি তদন্ত করে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. মুন্সী সাদুল্লাহ জানান, মাগুরায় বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৮ টি ক্লিনিক ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শারমিন ক্লিনিকে গত ২৩ অক্টোবর ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা করে দেয়। গোপনে ক্লিনিকটিতে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি।

মাগুরা সদর থানার এস আই মোঃ আশরাফুল আলম জানান আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টায় আছি।

(ডিসি/এসপি/ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭)