গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : সৌদি সরকার প্রেরিত দুস্থ ও এতিমদের জন্য দুম্বার মাংস নিয়ে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শুক্রবার (২৯ডিসেম্বর) তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ওই গোশত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, পুলিশ, স্থানীয় প্রভাবশালী মহল নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মাংস না পাওয়ার শঙ্কায় উপস্থিত দুস্থরা ট্রাকে থাকা দুম্বার গোশতের ২০টি প্যাকেট লুট করে নিয়ে যায়। এসময় কয়েকজন সামান্য আহত হন। উপজেলা পরিষদের উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ আছে অনিয়মের কারণে বিভিন্ন ইউনিয়নেও দুম্বার মাংস ঠিকমতো পৌছায়নি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তয়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সৌদি সরকার প্রদত্ত ১৫০ প্যাকেট দুম্বার মাংস দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে গৌরীপুর উপজেলার দুস্থদের জন্য প্রেরণ করে।

শুক্রবার সকালে উপজেলা প্রশাসন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে দুম্বার মাংস বিতরণের খবর পেয়ে শত শত দুস্থ ও অসহায় মানুষ ভীড় জমায়। কিন্তু দুস্থদের জন্য বিতরণ শুরু হওয়ার আগে সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ট্রাক থেকে দুম্বার মাংসের প্যাকেট নিয়ে যেতে শুরু করেন।

এ ঘটনায় মাংস না পেয়ে দুস্থরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে তাদের বাক-বিতন্ডা হয়। পরে দুস্থদের বিক্ষুব্ধ একটি অংশ দুম্বার মাংস ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন সহ কয়েকজন আহত হয় বলে খবর পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশে অনিচছুক কয়েকজন দুস্থ জানান, সকালে মাংস বিতরণের খবর পেয়ে উপজেলায় এসে দেখি পুলিশ ও প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা যে যার মতো মাংসের প্যাকেট নিয়ে যাচ্ছে। পরে অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থেকেও আমরা মাংস না পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসি।

ভাংনামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুৃন নূর খোকা বলেন, আমাদের ইউনিয়নে মাত্র এক প্যাকেট দুম্বার মাংস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেটাও নাকি মেম্বাররা অনেক কাড়াকাড়ি করে এনেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, মাংস বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়নি। সকল মাংস দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় দুস্থদের একটি অংশ ২০ প্যাকেট মাংস লুট করে নিয়ে যায়। এসময় প্যাকেট রক্ষা করতে গিয়ে আমি হাতে আঘাত পাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার আহম্মদ বলেন, দুম্বার মাংস লুটের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্জিনা আক্তার বলেন, দুম্বার মাংস বিতরণ নিয়ে ঝামেলার খবর শোনেছি। আমি একটা পরীক্ষাকেন্দ্র আছি। গৌরীপুর ফিরে এ বিষয়ে খোজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এসআইএম/এসপি/ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭)