স্টাফ রিপোর্টার : দুই কোটি ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগে এবি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থানা পরিচালক শামিম আহমেদ চৌধুরী ও হেড অব ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড ট্রেজারি আবু হেনা মোস্তফা কামালকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক।

রবিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন ও সহকারি পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে একই ঘটনায় গত ২৮ ডিসেম্বর ব্যাংকটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফজলার রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘যা বলার আমি ওখানে (দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা) বলেছি, আমি অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত নই।’

অন্যদিকে প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম ফজলার রহমান বলেন, ‘আমাদের যা বলার দুদককে বলে দিয়েছি। আমাদের ব্যাখ্যা আমরা দিয়েছি। ওনারা (তদন্ত কর্মকর্তা) তারপর দেখবেন। ব্যাংক থেকে সব ইনফরমেশন তাদের দেয়া আছে।’

এদিকে এ ঘটনায় ব্যাংকটি ১২ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের সঙ্গে এসব কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে ওই চিঠি দিয়েছে দুদক।

অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা গেছে, পিজিএফ নামের দুবাইভিত্তিক একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে ২০ মিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে দেয়ার কথা বললেও ওই কোম্পানির কোনো কর্মকর্তার নাম বা পরিচয় কাগজপত্রে দেখাতে পারেনি এবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বরং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই টাকা ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেছে। তিন কিস্তিতে ওই টাকা দুবাই যাওয়ার পর ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয় প্রতারক চক্র।

পরবর্তীকালে যার কোনো তথ্য এবি ব্যাংকের কাছে পাওয়া যায়নি। ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে খুররাম ও আবদুস সামাদ নামে দুই ব্যাক্তি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। এ ছাড়া দুদক ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তার একাধিকবার দুবাই যাওয়ার প্রমাণ পেয়েছে।

গত ২১ ডিসেম্বর দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক আরব-বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংকের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ ও পরিচালক ব্যারিস্টার ফাহিমুল হক পদত্যাগ করেন। রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) তারা পদত্যাগ করেন।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭)