মহিনুল ইসলাম সুজন, নীলফামারী : নীলফামারীতে এবার চলতি রবি মৌসমে রেকর্ড পরিমান সরিষার আবাদ হয়েছে। এ মৌসমে সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় আবাদে মনোযোগ দিয়েছে এলাকার কৃষকরা।এছাড়া আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চাষিরা ভাল ফলন পাওয়ার আশা করছেন।

সদর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়, এবারে চলতি মৌসমে উপজেলায় এক হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন ছিল। কিন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জিত জমির পরিমান দুই হাজার ১শত হেক্টর। উফসি জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে। এ ছাড়াও টলি-৭ ও সম্পদ জাতের সরিষা রয়েছে।

মাঠে মাঠে শুধুই যেনো হলুদের সমারোহ। গুন গুন করছে মৌমাছি। সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌমাছির ঝাঁক। এদিকে কম খরচে বেশী লাভের আশায় কৃষকরা এবার বোরো ধানের জমিতে আগাম জাতের ও অধিক ফলনশীল তেল জাতীয় এই ফসলের চাষ করছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।

নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বিশমুড়ি এলাকার কৃষক আশরাফ আলী বলেন, কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা জমিতে আগাম জাতের সরিষার আবাদ করছেন। তিনি বলেন, ধানের দামের দরপতনের কারণেই প্রতি বছরই তাদের লোকশান গুনতে হচ্ছে। তাই বিকল্প ফসল হিসেবে অন্য ফসলের পাশাপাশি তারা সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

একই এলাকার (ইউনিয়নের) বাহালী পাড়া সরকার পাড়া গ্রামের বাবুল হোসেন বলেন, চলতি মৌসমে দুই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। সরিষা তুলে নিয়ে ওই জমিতে বোরো ধান লাগাবেন। সরিষার ফসল থেকে উপার্জিত আয় বোরো ধান উৎপাদনে সহায়ক হবে বলে দাবি করেন তিনি।

উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের চৌধুরি পাড়া গ্রামের খোকন মিয়া বলেন, আগাম জাতের সরিষার অর্জিত অর্থ দিয়ে বোরো ধানের খরচ চালানো সহজ হবে। এছাড়াও সরিষা চাষে সার কম প্রয়োগ করতে হয়। সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানি লাগে না। একেবারই খরচ কম ও স্বল্প সময়ে এ ফসল ঘরে তোলা যায়। বর্তমান বাজারে দামও ভাল।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমান জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা সরিষা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন।

তবে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা আয় করতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি। চলতি বছর বিঘা প্রতি সরিষার পরিমান ধরা হয়েছে ৬মন।

এদিকে, সরিষার রোগ বালাই দমনে মাঠ পর্যায়ে উপ-কৃষি কর্মকর্তা চাষিদের রোগ বালাই দমনে নানা পরামর্শ প্রদান করছেন।

(এমআইএস/এসপি/জানুয়ারি ০১, ২০১৮)