স্বাস্থ্য ডেস্ক : অনেকেরই ধারণা হার অ্যাটাক বলে কয়ে আছে না। এটা যেকোনো সময় ধুম করে হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এটা আমাদের অনেক ভুল ধারণা। কোনো রোগই পূর্ব প্রস্ততি ছাড়া হতে পারে না। পার্থক্য শুধু এই যে কোনো কোনো শারীরিক সমস্যা শুরুতেই বুঝা যায়। আর কোনোটা বুঝা যায় একদম শেষের দিকে যেয়ে। কিন্তু সব ধরনের সমস্যারই কোনো না কোনো পূর্ব লক্ষণ থাকেই। সেই লক্ষণগুলো যে সতর্কতার সাথে দেখবেন সে হয়তো বেঁচে যেতে পারেন অনেক বড় বিপদ থেকে।

ঠিক তেমনে হার্ট অ্যাটাকেরও কিছু কিছু পূর্ব লক্ষণ থাকে যেগুলো গুরুত্বের সাথে নিলে আপনি হয়তো বেঁচে যেতে পারেন হার্ট অ্যাটাকের হাত থেকে। আসুন তাহলে যেনে নেই লক্ষণগুলো।

খুব তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়া:

আপনি কি অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন? কিছুক্ষণ কাজ করলে বুক ধড়ফড় করে? তবে আপনি এখনই কোন হার্টের চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। বিশেষ করে মহিলাদের হার্টের সমস্যার প্রধান লক্ষণ এটি হয়ে থাকে।

বুকে ব্যথা:

হার্ট অ্যাটাকের প্রথম ও প্রধান লক্ষণ হয় বুকে ব্যথা। সাধারণত বুকের মাঝখান থেকে প্রচণ্ড চাপ ব্যথা অনুভূত হয়। আস্তে আস্তে সেই ব্যথা চোয়ালে অথবা বাম কাঁধ ও বাহুতে ছড়িয়ে পড়ে থাকে। এই রকম ব্যথা দেখা দিলে অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শ্বাস কষ্ট ও দম ফুরিয়ে যাওয়া:

যদি আপনার অ্যাজমা বা অন্য কোনো সমস্যা না থাকে এবং হঠাৎ করে শ্বাস কষ্ট সমস্যা দেখা দেয় মূলত হৃদরোগ থেকে ফুসফুসে পানি জমাসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে ঠাণ্ডা ছাড়াও শ্বাস কষ্ট এর সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। অল্পতেই দম ফুরিয়ে যাওয়া, মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়াও ভবিষ্যত হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।

ঘাম হওয়া:

অতিরিক্ত ঘাম হওয়া হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ। বিশেষ করে ডায়াবেটিকস রোগীর ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা ছাড়া অতিরিক্ত ঘাম, বুক ধড়ফড়, হঠাৎ শরীর খারাপ লাগা শুরু হলে অব্যশই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

কাশি:

আপনার যদি দীর্ঘদিন কাশির সমস্যা থাকে, এবং তার সাথে সাদা বা গোলাপি কফ বের হয়। তবে বুঝতে হবে আপনার হার্ট ঠিক মতো কাজ করছে না। ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তবে হ্যাঁ কাশি সবসময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ নাও হতে পারে। কফের সাথে নিয়মিত রক্ত বের হলে এটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

অজ্ঞান হয়ে যাওয়া:

যদি কাজের মধ্যেই আপনি প্রায়ই হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যান, তাহলে বুঝবেন হার্টের সমস্যা রয়েছে। এটি যদি কোনো দুশ্চিন্তার কারণে না হয়ে থাকে তবে দ্রুত কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অনিয়মিত পালস রেট:

আপনি যদি অনেক বেশি নার্ভাস থাকেন বা কোথাও থেকে দৌড়ে আসেন আপনার পালস রেট উঠা নামা করতে পারে। তবে এটি যখন কোন কারণ ছাড়াই উঠা নামা করে সেটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নিয়মিতভাবে যদি এই সমস্যা দেখা দেয় তবে অতিসত্ত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মাথা ব্যথা:

যখনই প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়, আমরা ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু জানেন কি, হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ হল প্রতিদিনকার প্রচন্ড মাথা ব্যথা।

বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা ও ফুলে যাওয়া: আপনার বিভিন্ন অঙ্গে বিশেষ করে হাত-পায়ের গিঁট ব্যথা ও ফুলে যাওয়া সরাসরি হার্ট অ্যাটাক বা হার্টের সমস্যার সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। তবে দীর্ঘদিন হলে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। শরীরের অভ্যন্তরে পানি চলে আসার করণে শরীরের পানি চলে আসে , যার কারণে হাত-পায়ের গিঁট ফুলে যায়। বিশেষত অনেকক্ষণ কোথাও বসে থাকলে পায়ে পানি চলে আসে। নিয়মিত এটি ঘটলে অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

হার্ট অ্যাটাকের আগে আই লক্ষণগুলো আপনার দেখা দিতে পারে। যদি এই লক্ষণগুলো আপনার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। বিশেষ করে ডায়াবেটিকস বা উচ্চ রক্তচাপ রোগীরা উপরোক্ত কোনো কারণকেই অবহেলা করবেন না। উপরোক্ত যেকোনো একটি কারণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ০১, ২০১৮)