উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ঢাকাবাসী আমাকে সুযোগ দিলে ঢাকাকে আগামী প্রজম্মের জন্য বাসযোগ্য করে তুলব বলে অঙ্গীকার করেন দেশের স্বনামধন্য হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজি হক। তিনি বলেন, আমি রাজনীতিতে এসেছি মানুষের সেবা করতে। নিজের জন্য কিছু করতে আসি নাই । শুধু আমাকে একবার সুযোগদিন, আমি মাত্র দু’বছরের মধ্যে ঢাকাকে বাসযোগ্য করে তুলব। এই তরুণ আওয়ামীলীগ নেতা আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে আমি রাজনীতি করতে চাই । তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার বাবার ছোটবেলা থেকে খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিল। সেই সূত্রে পারিবারিকভাবেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত। তিনি বলেন, আমি ৯ বছর বয়সে বিদেশ গমন করেছি এবং সেখানেই পড়াশোনা শেষ করেছি।

কিন্তু মন পড়ে ছিল দেশে। সময় ও সুযোগ পেলেই দেশে চলে আসতাম। দেশ আমাকে সব সময়ই টানতো। আমি পারিবারিকভাবে দেশকে চিনেছি ও বুঝেছি বঙ্গবন্ধুর মাধ্যমে। আমার বাবার কাছ থে‌কে বঙ্গবন্ধুর গল্প শু‌নে‌ছি। আমার বাবার কলকাতায় লেখাপড়া করার সুবাদে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈ‌রি হয়। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, এটাই আমি আমার বাবার কাছ থেকে বুঝেছি। কারণ, বঙ্গবন্ধুই আমাদের দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।

যে মানুষটি দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের সবকিছু উজাড় করে দিয়েছেন সেই মানুষটিকে এই দেশের কিছু ষড়যন্ত্রকারী হত্যা করেছে। এই বিষয়টি সবসময়ই আমার মনকে পীড়া দেয়। তাই আমার লক্ষ্য ছিল, বিদেশে পড়াশোনা করলেও দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন, সেই সোনার বাংলা গড়ার জন্য আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব অবদান রেখে যাবো। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ১৯৭৬ সালে জন্ম নেয়া আদম তমিজি হক নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বাবার মতোই একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে।২০১০ সালে বাবার কাছ থেকে হক গ্রুপের দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পর প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তির পরিমাণ বাড়িয়েছেন ২৫ গুণ। নিজের মেধা, দক্ষতা ও উৎসর্গের মাধ্যমে নিজের প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে যেতে চান অনন্য এক উচ্চতায়। আদম তমিজি হকের সঙ্গে তার পারিবারিক, ব্যবসায়িক ও সামগ্রিক বিষয় নিয়ে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের সম্প্রতি কথা হয় তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হক সেন্টারে।

মাত্র ৯ বছর বয়সের পাড়ি জমান লন্ডনে। সেখানেই তিনি তার লেখাপড়া শেষ করেন। চাইলে সেখানেই স্থায়ী হতে পারতেন। দীর্ঘ সময় প্রবাসে কাটালেও মাতৃভূমির প্রতি টান বিন্দুমাত্র কমেনি তমিজি হকের। দেশের প্রতি ভালবাসার টানে ফিরে আসেন দেশে। বাবার কাছ থেকে বুঝে কেন হক গ্রুপের দায়িত্ব। হক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নিজের মতো করে। ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে নিজেকে আলোকিত করার প্রয়াস আদম তমিজি হকের। নিজেকে নিবেদিত করেছেন সাধারণ মানুষের সেবায়।
বিভিন্ন সামাজিক এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বরাবরাই অবদান রেখে চলেছেন। দেশে বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডারে অবদান রেখেছেন নিজেদের সাধ্যমত। রোহিঙ্গা সমস্যায়ও দেখা গেছে তার উদার অংশগ্রহণ। নিজের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে গেছেন দুঃস্থ রোহিঙ্গাদের সেবায়।

ব্যারিস্টার বাবা তমিজুল হক ভারতের আসামের বাসিন্দা হলেও দেশভাগের আগেই ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে হক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। নিজের সততা, শ্রম ও মেধা দিয়ে কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত করে যান। সেই সফলতাকে আরো সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রয়াসে নিবেদিত আদম তমিজি হক। ক্রেতা সাধারণের চাহিদাকেই প্রাধান্য দেয়া হয় বলে জানান তমিজি হক।

তিনি বলেন, আমরা ক্রেতাসাধারণকে ঠকানোর ব্যবসা করি না। আমাদের একজন ক্রেতাও যেন আমাদের পণ্য কিনে প্রতারিত না হন সেদিকে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে। ব্যবসায়ী হিসেবে দক্ষ আদম তমিজি হকের জনসেবায়ও সুনাম রয়েছে। টঙ্গী, গাজীপুরের বেশ কয়েকটি মসজিদের উন্নয়নসহ আঞ্জুমান হেদায়াতুল উম্মত এতিমখানার তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। শীতার্ত মানুষের জন্য প্রতিবছর কম্বল বিতরণ করে আসছেন। কক্সবাজারের হিমছড়িতে তমিজুল হক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি।

ব্যবসায়িক ও জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ইচ্ছা আছে নিজেকে মূলধারা রাজনীতিতেও প্রতিষ্ঠিত করতে। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে জনসেবায় কাজ করতে চান। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রতি দেশের মানুষের এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা বিদ্যমান। তবে এই সব নেতিবাচক ধারণা একমাত্র তরুণ ও আদর্শবান রাজনীতিবিদরাই দূর করতে পারেন বলেই তার বিশ্বাস।

তিনি বলেন, বর্তমান দেশ পরিচালনার জন্য অ্যাডভান্সড এডুকেইটেড ও সফিস্টিকেটেড লোক প্রয়োজন। যার সবগুলো গুণই তরুণ নেতৃত্বের মধ্যে বিদ্যমান। কয়েক বছর পরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানে চলে যাবে। তাই যু‌গের সা‌থে তাল মি‌লি‌য়ে চল‌তে হ‌লে তরুণ নেতৃত্বের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, বর্তমান দেশ পরিচালনার জন্য অ্যাডভান্সড এডুকেইটেড ও সফিস্টিকেটেড লোক প্রয়োজন। যার সবগুলো গুণই তরুণ নেতৃত্বের মধ্যে বিদ্যমান। কয়েক বছর পরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানে চলে যাবে। তাই যু‌গের সা‌থে তাল মি‌লি‌য়ে চল‌তে হ‌লে তরুণ নেতৃত্বের বিকল্প নেই।

তবে রাজনীতিতে আসলে নিজের জন্য নয়, বরং জনগণের জন্যই কাজ করবেন বলে জানালেন আদম তমিজি হক।

(পিএস/এসপি/জানুয়ারি ০৫, ২০১৮)