নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর ও ভবানীপুর এলাকায় আখের চিনি দিয়ে খেজুরের গুড় তৈরীর কারখানায় অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব-৫ এর একটি বিশেষ টিম।  

রবিবার (৭ জানুয়ারী) ভোর ৬টায় র‌্যাবের ওই টীম কালিকাপুরে ভেজাল গুড়ের কারখানার সন্ধান পেয়ে তা সাড়ে ৬ ঘন্টা সময় পর্যন্ত ঘিরে রাখে। পরে বেলা ১২টার দিকে নাটোরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল আলম উপস্থিত হয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কারখানার মালিক শফিকুল ইসলাম শফিক (৪৫)কে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা ও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাসের কারাদণ্ড, জমির মালিক রিকি কস্তা (৩৪)কে ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করেন।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে ভ্রাম্যমান আদালত উপজেলার ভবানীপুরে কারখানার মালিক আজাহার আলীর ছেলে কোরবান আলী (৩৮) কে ভেজাল খেজুরের গুড় তৈরীর দায়ে ৫০ হাজার টাকা ও তার ভাই সাজদার আলী (২৮) কে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

আদালত ওই দুই স্থান থেকে ২৪ মণ ভেজাল পাটালী গুড়, ৪ ড্রাম পঁচা তরল গুড়, ৩২ মণ আখের চিনি, ২ লিটার রং মিশ্রিত কেমিক্যাল, ২৮ কেজি পাথর চুন সহ গুড় তৈরীর সরঞ্জমাদি জব্দ করে। অভিযান ও আদালত পরিচালনার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজ্জাকুল ইসলাম, র‌্যাব-৫ এর মেজর মো. শিবলী মোস্তফা সহ র‌্যাবের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

মেজর মো. শিবলী মোস্তফা জানান, কালিকাপুরে রিকি কস্তার বাড়ি ভাড়া নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম শফিক দীর্ঘদিন ধরে আখের চিনি জ্বালিয়ে তার মধ্যে বিষাক্ত কেমিক্যাল সহ রং মিশিয়ে খেজুরের পাটালী গুড় তৈরী করে তা বাজারজাত করে আসছিলেন।

এ সময় স্থানীয়রা জানান, গত ৪ মাস ধরে নাটোরের লালপুরের মৃত খবিরউদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম শফিক রিকি কস্তার বাড়ি ভাড়া নিয়ে চিনির সাথে কেমিক্যাল মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরী করে আসছিলো। এ কাজে ১৬ জন কর্মচারী নিয়োজিত ছিলো।

কর্মচারীরা জানান, ৪৮ টাকা কেজি আখের চিনি কিনে তা খেজুরের গুড় বানিয়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি করা হয়। এ খেজুরের গুড় অধিকাংশই ঢাকা ও চট্রগ্রামের ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়। ভ্রাম্যমান আদালত ওই কর্মচারীদেরকে এসব অন্যায় কাজে ভবিষ্যতে নিয়োজিত না হওয়ার জন্য সতর্ক করে দেন।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় জনৈক পৌর কাউন্সিলরের বাড়ি সংলগ্ন ওই কারখানাটিতে কাউন্সিলরের ছত্রছায়ায় ব্যবসায়ী শফিক দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল গুড় তৈরী করে আসছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে ওই কাউন্সিলরও এই ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন।

(এডিকে/এসপি/জানুয়ারি ০৭, ২০১৮)