নওগাঁ প্রতিনিধি : সোমবার নওগাঁ জেলায় গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে নেমে এসে দাঁড়িয়েছে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ফলে শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে শীতের তীব্রতা আরো বেড়ে গিয়ে মানুষের দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে কেউ বের হচ্ছেনা । তীব্র এই শীতে বাইরেতো দুরের কথা ঘরের মধ্যেও টেকা দায় হয়ে পড়েছে। শীতের তীব্রতায় গোটা জেরা এখন কাঁপছে। 

সোমবার বেলা ১১টায় সুর্য্যরে দেখা মিললেও তা ছিল নিরুত্তাপ। ঘন কুয়াশা আর একটানা হিমেল বাতাসে মানুষের দুর্দশাকে আরো একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, এরকম তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে অন্ততঃ আরো ৪/৫ দিন। এরপর ধীরে ধীরে শীতের তীব্রতা কমবে।

এদিকে শীতের কারনে জেলার রানীনগরে রবিবার বিকেলে আব্দুল জলিল (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এনিয়ে জেলায় শীতের কারনে ২ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। অপরজনের বাগি মহাদেবপুর উপজেরার কুঞ্জবন গ্রামে। বৃদ্ধ আব্দুল জলিল রানীনগর উপজেলার সিম্বা গ্রামের বাসিন্দা।

নওগাঁ সদার হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ মনীর আলী আকন্দ জানান, সদর হাসপাতালে শীতজনিত সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্স ও চিকিৎসকদের। বিশেষ করে শিশুরা ভর্তি হচ্ছে ডায়রিয়া ও নিমোনিয়া রোগ নিয়ে।

গড়ে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ্এ্যাজমা রোগ নিয়ে সাধারনত আসছে বয়স্করা। এ সংখ্যা প্রতিদিন প্রায় ১০/১৫ জন। এছাড়া বর্হিবিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ৫ থেকে ৭শ’ জন রুগিকে। এসময় শীতজনিত রোগের চিকৎসার জন্য যে ওষুধ প্রয়োজন তার তুলনায় সরবারাহ কম।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারন আধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজিৎ কুমার মল্লিক জানান, তীব্র শীতে জমিতে চাষকৃত শস্যের কি সমস্যা হচ্ছে তা এখনই বলা যাবেনা। এর প্রভাব ক’দিন পর বোঝা যাবে। তবে শীতের তীব্রতা জনিত কারনে বোরো ধানের বীজতলায় পচন ধরার সম্ভবনা থাকে। টমেটো ও আলু ক্ষেতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এদিকে গতবছরের তুলনায় এ বছর সরকারী ও বেসরকারী ভাবে শীতবস্ত্র বিতরনের উদ্যোগ খুবই কম। যে টুকু দেয়া হচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় একবাইে নগন্য। বেশ কয়েক প্রবীন ব্যক্তি জানান, নওগাঁ জেলায় গত ৫০ বছরেও এমন শীতের তীব্রতা অনুভূত হয়নি। ফলে সেই প্রস্তুতি শীতার্তদের নাই। এতে সব কিছুতেই নেমে এসেছে স্থবিরতা।

(বিএম/এসপি/জানুয়ারি ০৮, ২০১৮)