স্টাফ রিপোর্টার : সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, অফিসার ও ক্যাশ অফিসার পদে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ফলে ওই তিন ব্যাংকসহ আট ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে আগামীকাল শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) নির্ধারিত সময়ে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ আদেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন খান বলেন, তিন ব্যাংকের বিষয়ে হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছেলন তা তুলে নিয়ে আট ব্যাংকের পরীক্ষা একত্রে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই, পরীক্ষা যথা সময়েই হবে। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব সাইটে পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সোনালী ব্যাংক ৭০১টি শূন্য পদে অফিসার ও অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। ওই বছরের ২৬ জুলাই রূপালী ব্যাংক ৪২৩টি শূন্য পদে সিনিয়র অফিসার ও ৩ অগাস্ট জনতা ব্যাংক ৭৩৬টি শূন্য পদে অ্যাসিসট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়।

কিন্তু এসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নিয়োগ পরীক্ষা না নিয়ে গত বছরের ২৩ অগাস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের একহাজার ৬৬৩টি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা (সাধারণ) শূন্য পদের জন্য সমন্বিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়।

এরপর ২৯ আগস্ট আবার তিন হাজার ৪৬৩টি কর্মকর্তা (সাধারণ) শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। সর্বশেষ গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর দুই হাজার ২৪৬টি কর্মকর্তা (ক্যাশ) শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ১২ জানুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষার দিন রাখা হয়।

কিন্তু ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির পর আবেদন করা প্রার্থীদের পরীক্ষা না নিয়ে ২০১৭ সালে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় বগুড়ার আসাদুজ্জামান, কুমিল্লার আবু বকরসহ ২৮ জন নিয়োগ পরীক্ষার সার্কুলার বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে গেলে ওইসব বিজ্ঞপ্তির নিয়োগ পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়।

ওই বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তির আওতায় পরীক্ষা নেয়ার আগে ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির আওতায় নিয়োগ পরীক্ষা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন আদালত।

বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থসচিব, ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিবকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

রিটকারীদের আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন বলেন, ২০১৬ সালের তিনটি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা না নিয়ে গত বছরের যে তিনটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে সেগুলোর নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ১২ জানুয়ারি। ২০১৬ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যারা আবেদন করেছিলেন, তাদের মধ্যে ২৮ আবেদনকারী গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত নিয়োগ পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। যা আজ চেম্বারে স্থগিত হলো।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০১৮)