কবীর চৌধুরী তন্ময়


আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থকদের একটা কথা স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে, সরকার আর রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ কিন্তু এক নয়। সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ১৪ দলের বিভিন্ন এমপি-মন্ত্রীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জোটবন্ধ সরকার এক হলেও আদর্শগত রাজনৈতিক সংস্কৃতি এক নয়।

১০ম জাতীয় সংসদ সাংবিধানিক নির্বাচনটির বিশেষ প্রেক্ষাপটে অনেক আগাছা আজ গাছের আকার ধারণ করেছে। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের আদর্শ ধারণ করে না এমন লোকেরাও এমপি হয়েছে। আবার নৌকা প্রতীক ছাড়া যাঁরা নিজেস্বদলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে অতীতে লজ্জাজনক ইতিহাস গড়েছে, তাঁরা অনেকেই আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে এবার এমপি-মন্ত্রীও হয়েছে।

তাই বলে কী তাঁরা আওয়ামী লীগের আদর্শ অনুস্মরণ করে? মোটেও না। প্রত্যেকটা দলের নিজেস্ব একটা গঠনতন্ত্র আছে। দল ভারী করার কৌশল আছে। আর জেলা-উপজেলার মাঠ পর্যায় নিজেস্ব শক্তি বৃদ্ধি করার কর্মপরিকল্পনাও আছে। দলের নেতাকর্মীদের চাহিদা পূরণ করার চেষ্টাও আছে।

এইসব এমপি-মন্ত্রী সরকারের অংশ হলেও তাঁরা কিন্তু মোটেও আওয়ামী লীগের অংশ বা রাজনৈতিক আদর্শে চলাচল করে না। সম্ভব হলে তাঁরা অনেকেই আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করে নিজের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির চেষ্ঠা প্রকাশ্যেই করত। আর তা যে একেবারে করেও না, তা বিচার বিশ্লেষণ করলে অনেক কিছুই দিবালোকের মতন পরিস্কার দেখা যাবে।

এই ধরুন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন! জোটবন্ধ সরকার হলেও স্থানীয় নির্বাচন হয়ছে দলীয় প্রতীক নিয়ে। আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী তাঁর প্রচার-প্রচারণা চালানোর সময় অনান্য প্রার্থীদের ব্যর্থতা আর দোষগুলো ভোটারদের কাছে তুলে ধরে রংপুর মহানগরের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিজের পরিকল্পনার বার্তা সবার কাছে পৌঁছানোর চেষ্ঠা করেছে। আবার এমনি করে লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির (জাপা) বিজয়ী প্রার্থীও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ভুল আর অন্যায়-অপরাধগুলো তুলে ধরে ভোটারদের কাছে নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন জয় করার চেষ্ঠা করেছে এবং সে কৌশল অবলম্বন করে তিঁনি সফলও হয়েছেন। বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে তিঁনি এখন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র, এটাই বাস্তবতা!

আর নির্বাচনী এই ট্রেডিশন যে শুধু বাংলাদেশে তা নয়। স্বয়ং আমেরিকার মত রাষ্ট্রের প্রচার-প্রচারণাও এমন! যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার সময় তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের আলোচনা-সমালোচনাগুলোর প্রতি একটু লক্ষ্য করলে এবং সেগুলোকে কীভাবে মোকাবেলা করে সে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছে; তা আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জামায়াত-শিবিরের সাথে আমাদেও ব্যক্তিগতভাবে কারোরই সম্পর্ক খারাপ থাকার কথা নয়। সম্পর্ক খারাপ হয়েছে কিংবা আমরা তাঁদের ঘৃণা করি তাঁদের মওদুদীবাদের নোংরা আদর্শকে। তাঁদের জাত শত্রু মনে করি, কারণ তাঁরা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ই স্বাধীনতার বিরুদ্ধে তাঁদের অবস্থান পরিস্কার করেছে। পাকিস্তানের পক্ষই শুধু অবলম্বন করেনি; পাকিস্তান রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে ধর্মকে ব্যবহার করে তাঁরা আমাদের ৩০ লাখ তাজা প্রাণকে হত্যা করেছে। ২ লাখেরও বেশি নারী মুক্তিযোদ্ধার সম্ভ্রম বিনাশ করেছে। আর সে ঘৃণা পৃথিবীর ধ্বংস হওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত অনবরত থাকবে।

এখানে দুঃখজনক ব্যাপার হলো, কিছু নেতা ভিন্ন দলের, ভিন্ন মতের, ভিন্ন আদর্শের, এমনকি জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী দিয়ে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনে অন্তভূক্তির মাধ্যমে ব্যক্তি ও দলের গ্রুপ ভারি করার অপকৌশল গ্রহণ করেছে। এতে বিশেষ করে সাধারণ কোনো নেতাকর্মী, সমর্থক, জনগণের তেমন কিছু না হলেও আসল সর্বনাশ হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শ ও ঐক্যের। আর যেসকল বিতর্কিত নেতাকর্মী দ্বারা দল-গ্রুপিং ভারি করা হচ্ছে তাদের কারো প্রতি ব্যক্তিগত ভাবে কোনো ঝগড়া বা দ্বন্দ আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। এখানে দ্বন্দটা আদর্শগত।

আলোচনা-সমালোচনা এখানে একেবারেই পরিস্কার- বিতর্কিত ব্যক্তি যাঁর আদর্শ আওয়ামী লীগের আদর্শের পরিপন্থী এমন ব্যক্তিকেও যাঁরা সুপারিস করে এমপি বানাতে সহযোগিতা করেছে; তাঁরা সবাই ওইসব ব্যক্তির কাছ থেকে লাভবান হয়েছে। আর এখনও যাঁরা বিভিন্ন কমিটিতে আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও গ্রহণযোগ্য নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করে আত্মীয়করণ ও ভিন্ন আদর্শের ব্যক্তি ও তাঁদের সন্তানদের দিয়ে সংগঠন ও গ্রুপিং ভারী করার চেষ্ঠায় আছে, তাঁরাও ব্যক্তিগতভাবে বেশ ভাল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছে।

আমি তর্কের খাতিরে না বললেও প্রশ্ন থেকে যায়, সুযোগ-সুবিধা যদি নাই পাবে, তাহলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের পরিপন্থী জামায়াত-শিবিরের আদর্শে গড়া ব্যক্তিকে কীভাবে নৌকা প্রতীক দিতে সুপারিস করে? একজন সত্যিকারের বঙ্গবন্ধু আদর্শের কর্মী কী করে শেখ হাসিনার অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে? বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতাকর্মী কখনো আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের বাইরে যেতে পারে না। শেখ হাসিনার হাতকে দৃশ্যমান শক্তিশালী দেখিয়ে ভিতর থেকে ঘুণে ধরা অবস্থান সৃষ্টি করা ব্যক্তি-মহল; কখনো শেখ হাসিনার কর্মী হতে পারে না! আওয়ামী লীগের জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না এবং ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছে পুরোপুরি বিতর্কিত করার মাধ্যমে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রই প্রতীয়মান!

আর এখন এমনটাই যে হচ্ছে, সেটা এখন দিবালোকের মতন পরিস্কার। যেমন একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন- আওয়ামী লীগের কিছু নেতা, এমপি, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী সমসাময়িক আওয়ামী লীগ থেকে আরম্ভ করে ছাত্রলীগের যেকোন শাখার কমিটি চুড়ান্ত করার ক্ষেত্রে পরিবারতান্ত্রিক কৌশল গ্রহণ করে। ছাত্রলীগের কমিটি চুড়ান্ত করে স্থানীয় এমপি! এমনও হয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতা-এমপি দ্বারা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন হয়েছে। অন্যান্য সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা কী ধরনের চাপে আছে, তা একমাত্র তাঁরাই ভালো বলতে পারবে!

আর এগুলো করতে গিয়ে নিজের আনুগত কর্মী যতই অযোগ্য কিংবা বির্তকিত হোক কিংবা জামায়াত-শিবির ও জামায়াত ইসলামের পরিবারের কোনও সদস্য হলেও মাফ পেয়ে যাচ্ছে। তাকে ছাত্রলীগ থেকে আরম্ভ করে আওয়ামী লীগের পদে পদায়ন করতেও তাঁরা চিন্তা করছে না এবং ভবিষ্যতেও করবে কিনা তা জানা নেই! আর এটা যে বঙ্গবন্ধু’র হাতে গড়া আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক; তা যেন জেনেও কৌশল অবলম্বন করার কথা বলে সর্বনাশের কাজটাই ভিতরে-ভিতরে করে যাচ্ছে!
পাঠক! এখানে আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন, তাহলে কী আওয়ামী ও তার অঙ্গ-সহযোগি সংগঠন নেতাকর্মী সংকটবোধ করছে? মোটেও না! এখানে ব্যক্তি স্বার্থটাকে বড় করে দেখা হচ্ছে। গ্রুপিং ভারী ও শক্তিশালী করে স্থানীয় ভাবে প্রভাব খাটানোর চেষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসা এমনকি ডিস-ইন্টারনেট ব্যবসাও নিজেদের মেয়ের জামাই, ছেলে কিংবা ছেলের বন্ধু অথবা খু-ব দূরের কোনও আত্মীয়কে দিয়ে জিম্মি করার অপকৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে।

এগুলো করার কারণ কী খুজতে গেলে পাবেন- প্রথমত, নিজের আধিপত্য বিস্তার করা। সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে নিজের শক্তি প্রদর্শন করা এবং একটা সময় দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার সামর্থ দেখানো যা দলকে জিম্মি করার অপকৌশল গ্রহণ। আর দ্বিতীয়ত, স্থানীয় নেতাকর্মীর মনোবল ধ্বংস করে আনুগত ব্যক্তি-মহল দ্বারা ব্যবসা-বানিজ্য নিজের অনুকূলে রাখা। পরিবাতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা এবং স্থানীয় জনগণকে জিম্মি করে নিজের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা।

এই ধরনের কর্মকান্ডে মুলত আওয়ামী লীগের প্রাণ তৃণমুল নেতাকর্মীকে ঘুণে ধরা অবস্থায় রেখে আওয়ামী লীগের ঐক্য নষ্ট এবং ভিতর থেকে দূর্বল করে রাখা।

আর এখানে যাঁরা বঙ্গবন্ধু’র আদর্শের বিপরীত আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার কৌশল গ্রহণ করেছে বা ভবিষ্যতে করবে; আমি ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে তাঁদের গণ্য করব। বঙ্গবন্ধু’র আদর্শকে ধ্বংস করে যাঁরা শেখ হাসিনার অর্জনকে বিতর্কিত করার জন্য জামায়াত-শিবিরের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করবে; তাঁদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের লক্ষ-লক্ষ সত্যিকারের ত্যাগী নেতাদের ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাব। কারণ আওয়ামী লীগ শুধু আমার-আপনার অধিকার বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে না, দেশের স্বাধীন-সার্বভৌমত্বকে নিরাপদ রাখাতে অতন্দ্র প্রহরীর মত সর্বদাই নিবেদিত। একটি উন্নত বাংলাদেশ ভবিষ্যত প্রজন্মকে উপহার দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তাই কতিপয় ব্যক্তি-মহলের কারণে আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে বিতর্কিত করতে দেওয়া যাবে না। শেখ হাসিনার অর্জনগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে এই আওয়ামী লীগের ত্যাগী-নেতাকর্মীদেরই।

বন্ধু! একটু স্পষ্ট করে বিচার-বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, যাঁরা এই ধরনের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে স্যোশাল মিডিয়া বা মুল গণমাধ্যমে লেখালেখি করে জামায়াত-রাজাকারের আদর্শের ব্যাপারে আওয়ামী লীগকে সতর্ক করছে বা ভুল সিদ্ধান্তগুলো থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিচ্ছে, তাঁরা প্রত্যেকে আওয়ামী লীগকে মন-প্রানে ভালোবাসে। বঙ্গবন্ধু’র আদর্শকে সম্মান-শ্রদ্ধা করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য স্ব-স্ব ভূমিকায় কাজ করে যাচ্ছে। তাও নিজের খেয়ে বনের মহিষ তাড়ানোর মতন...!!
এখনে সাংবাদিক, ব্লগার-অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট, সাবেক ছাত্রলীগের মেধাবী শিক্ষিত নেতা, আওয়ামী লীগ নেতা বা সমর্থক সকল অপবাদ মাথায় নিয়ে ভুল সিদ্ধান্তগুলো ধরিয়ে দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। জানে, সিনিয়র কিছু নেতা বা একটি মহল তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে বা ষড়যন্ত্র করবে। তারপরেও নিজ-নিজ অবস্থান থেকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে মতামত প্রকাশ করছে।

আমাদের সবাইকে একটি কথা চিরতরের জন্য মনে রাখতে হবে, ইতিহাস-ঐতিহ্যের আওয়ামী লীগ দীর্ঘ একুশ বছর পর ক্ষমতায় এসেও ষড়যন্ত্রকারীদের নার্ভ বুঝতে পারেনি। আপন-পর ও ষড়যন্ত্রকারী চিহ্নিত করেতে ব্যর্থ হয়েছিল। তাই ২১ আগস্টের মতন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। ১/১১-এর মত ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এখনও আপন-পর চিনতে-বুঝতে ভুল করলে; ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু আর ভুল করবে না।

আর যাঁরা বুঝেন বা বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষমতা রাখেন তাঁরা নোট রাখতে পারেন- আজ যাঁরা জামাত-শিবির নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগে অন্তর্ভূক্তির বিরুদ্ধে, কাল তাঁরাই আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার পাশে থেকে শত-সহস্র ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করবে। দল বা তাঁর কঠিন সময়ে পিছু হাটবে না। আর যাঁরা নিজের গ্রুপিং ভারী করার পক্ষে, কাল দেখবেন তাঁদের আসল চরিত্র!

সত্য অনেক সময় তিক্ত স্বাধ গ্রহণে বাধ্য করে যেমন, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার কাজে অনেকের স্বার্থ নষ্ট হয়েছে। আবার যুদ্ধাপরাধী বিচারে আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতাদেরও পারিবারিক, ব্যবসায়িক, রাজনৈতিকসহ অনেক স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে। বিচার চলমানও আছে। চলমানও আছে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র। অপেক্ষা মোক্ষম সময়ের...।

বঙ্গবন্ধু-শেখ হাসিনার সত্যিকারের সৈনিক, আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার কিছু ভুল সিদ্ধান্তে কখনো চুপচাপ বসে থাকতে পারে না। ভবিষ্যত আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূণ্য দেখতে চায় না। আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্যের মাঝে কলঙ্ক লেগে যাক; তা তাঁরা চায় না। তাই শত-সহস্র সমস্যা-ভয় থেকেও আওয়ামী লীগের ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করে। আর এই সমালোচনাকে ব্যক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান যদি পর্যবেক্ষণমূলক গ্রহন করে তার সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করে, তাহলে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অনাকাঙ্খিত ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। আলোচনা, সমালোচনার বিপরীতে হামলা-মামল শুধু ঐ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেই বিতর্কিত করে না; একটা সময় ধ্বংস হতেও সাহায্য করে।

আওয়ামী লীগের উচিত হবে তার ইতিহাস-ঐতিহ্য ধরে রাখা এবং নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির কাজে মনোযোগ দেওয়া। ওয়ার্ড-ইউনিয়ন ও জেলা-উপজেলায় যোগ্য লোকদের দ্বারা নেতৃত্বের বলয় তৈরি করা। তৃণমূলের শিক্ষিত-মেধাবীদের এগিয়ে যেতে সহায়তা করা। সরকার ও সংগঠনের ভিতরকার অবস্থান নিয়ে সৃষ্ট আলোচনা-সমালোচনাকে গুরুত্ব দেওয়া। কারণ নিজের ভুলগুলো শুধরে সঠিক পথে চলতে সহায়তা করে যৌক্তিক সমালোচনা। মনে রাখতে হবে, ভুলের মধ্যে বসবাস দেখলে বিপরীত আদর্শের রাজনৈতিক ব্যক্তি-মহল প্রসংশা করবে আর সত্যিকারের আপনজনরাই ভুল থেকে উঠে আসার রাস্তা দেখাবে।

লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ)।