আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যায় সেনাসদস্যরা জড়িত রয়েছে বলে প্রথমবারের মতো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর স্বীকারোক্তির পর স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

গত ডিসেম্বরে রাখাইন প্রদেশের মংডুর ইন দিন গ্রামে একটি গণকবরের সন্ধান পায় আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। সেখান থেকে অন্তত ১০ রোহিঙ্গা মরদহে উদ্ধার করা হয়; যা নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়েছে।

বুধবার মিয়ানমার সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের ফেসবুকে পেইজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাঙালি সন্ত্রাসীদের হত্যার ঘটনায় সেনাসদস্য এবং স্থানীয় গ্রামবাসীরা জড়িত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

নিপীড়িত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাঙালি বলে ডাকে মিয়ানমার। দেশটিতে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি নেই তাদের।

সংখ্যালঘু এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে মিয়ানমার শান্তিপূর্ণ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীর তকমা জুড়ে দিয়ে নাগরিকত্ব দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে। নিপীড়ন চালানোর অভিযোগ কয়েক মাস ধরে অস্বীকার করে এলেও বুধবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে রোহিঙ্গা হত্যায় সেনা সংশ্লিষ্টতার নজিরবিহীন স্বীকারোক্তি আসে।

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসছে মিয়ানমার। এছাড়া সহিংসতায় বিপর্যস্ত রাখাইনে জাতিসংঘের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি দেশটির সরকার।

লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি বলছে, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের যে স্বীকারোক্তি দিয়েছে তা ইতিবাচক। কিন্তু এটি বিশাল অপরাধের এক খণ্ডচিত্র মাত্র।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক জেমস গোমেজ বলেন, এটি বিশাল আকারের অপরাধের আংশিক চিত্র মাত্র। জাতিগত নিধন অভিযানের সময় অন্যান্য যে নৃশংস অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তা স্বাধীন তদন্তের জন্য এক ধরনের সতর্কতা। এই অভিযানের কারণে গত আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়েছে। সূত্র : আল জাজিরা।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০১৮)