প্রবীর সিকদার

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তান মুখী এই দেশের গতি শ্লথ হয় ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার ক্ষমতা আরোহণের ভেতর দিয়ে। সেই ধারা আরও শ্লথ শুধু নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় এই দেশের যাত্রা শুরু হয় ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের আওয়ামীলীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর। দেশ চলছে মুক্তিযুদ্ধের সেই ধারাতেই।

একযোগে সারাদেশে বোমা হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান ধরা পড়া ও ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে খুন করতে নৃশংস গ্রেনেড হামলার প্রেক্ষাপটে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের রাজনৈতিক শক্তি যদি ক্ষমতায় আরোহণ না করতো এবং বিএনপি জামায়াতের শাসন অব্যাহত থাকতো, তাহলে আমাদের এই প্রিয় বাংলাদেশ এতোদিনে আফগানিস্তান কিংবা পাকিস্তান কিংবা ইরাক-সিরিয়ার মতো ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছে যেতো। সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির উদ্ভব রুখে দিয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের আওয়ামীলীগ।

আমি হলফ করে বলতে পারি, বাংলার মানুষ সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি অর্থাৎ আফগানিস্তান কিংবা পাকিস্তান কিংবা ইরাক-সিরিয়ার কথা স্বপ্নেও চিন্তা করতে পারে না। এই যদি হয় সত্যিকারের চিত্র, তাহলে গণতন্ত্রের নামে যারা বিএনপি-জামায়াতকে ফের ক্ষমতায় বসানোর অপচেষ্টা শুধু নয়, ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন, তারা কোন বাংলাদেশের স্বার্থে সেগুলো করে যাচ্ছেন, সেটা গভীর বিবেচনার দাবি রাখে! আমার মতো লাখ লাখ মানুষের মূল্যায়ন, শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের জনপদ আফগানিস্তান কিংবা পাকিস্তান কিংবা ইরাক-সিরিয়া বানাতে দেয়নি, এটাই তাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য; এই সাফল্যের কাছে ঠুনকো গণতন্ত্রের বুলি শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয়, রীতিমতো আত্মহত্যার সামিল। আমরা এই ধারা যেকোনো মূল্যে বহমান রাখতে চাই, সেই দিন পর্যন্ত, যেদিন এই দেশে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের হুমকি চিরদিনের মতো নির্মূল না হয়! এর অন্যথা হলে অস্তিত্বের সংকটে পড়ে যাবে বাংলা ও বাঙালি।

প্রিয় দেশপ্রেমিক নাগরিক, আর কোনও দ্বিধা কিংবা সংকোচ নয়, আসুন, কোনও অভিমান কিংবা সংকীর্ণ স্বার্থে তাড়িত না হয়ে এই দেশে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের আঁতুড়ঘর বিএনপি-জামায়াত তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সকল অপশক্তিকে আমরা এখনই চিৎকার করে 'না' বলে দেই। আর সেই 'না' অস্ত্রটি ব্যবহারের এখনই যথোপযুক্ত সময় এবং শেষ সময়।