স্টাফ রিপোর্টার : টঙ্গীর তুরাগতীরে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন শুক্রবার লাখো মুসল্লি একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। নিয়মিত তাবলিগ জামাতের বাইরেও ঢাকা-গাজীপুরসহ ১৬ জেলার কয়েক লাখ মুসল্লি নামাজে অংশ নেন। জুমাপূর্ব বয়ান ও নামাজের ইমামতি করেন কাকরাইলের মুরব্বি হাফেজ মাওলানা জুবায়ের।

বৃহত্তম জুমার নামাজে অংশ নিতে ভোর থেকেই ইজতেমা মাঠে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। দুপুর ১২টার দিকে ইজতেমা মাঠ উপচে আশপাশের খোলা জায়গাসহ সব স্থান জনসমুদ্রে পরিণত হয়। মাঠে স্থান না পেয়ে অনেকে মহাসড়ক ও অলি-গলিসহ যে যেখানে পেরেছেন পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ বিছিয়ে জুমার নামাজে শরিক হয়েছেন। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বেশ কিছুক্ষণের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ও ব্যাপক প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। বাদ ফজর জর্দানের মাওলানা সৈয়দ ওমর খতিবের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা।

এরপর বাদ জোহর বয়ান করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মোহাম্মদ হোসেন, বাদ আছর বয়ান করবেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল বার ও বাদ মাগরিব বয়ান করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মোহাম্মদ রবিউল হক।

ইজতেমায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের তাবলিগ মারকাজের শুরা সদস্য ও বুজর্গরা বয়ান পেশ করেন।

ইজতেমায় বিভিন্ন ভাষাভাষি মুসল্লিরা আলাদা আলাদা বসেন এবং তাদের মধ্যে একজন করে মুরব্বি মূল বয়ানকে তাৎক্ষণিক অনুবাদ করে শুনান।

বিশ্ব ইজতেমার কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আম ও খাস বয়ান, তালিম, তাশকিল, ছয় উছুলের হাকিকত, দরসে কোরআন, দরসে হাদিস, চিল্লায় নাম লেখানো, নতুন জামাত তৈরি। ১৪ জানুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এই পর্বের সমাপ্তি ঘটবে।

প্রথম পর্বে ১৬ জেলা এবং দ্বিতীয় পর্বে ১৬ জেলার মুসল্লিরা তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিয়ে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল আছেন। তবে ঢাকা জেলার মুসল্লিরা দুইপর্বেই অংশ নেবেন। সারা দেশের জামাতবদ্ধ মুসল্লিদের জেলাওয়ারি দু’পর্বে ভাগ করা হয়েছে। কোন কোন জেলার মুসল্লি কোন পর্বে অংশ নেবেন সে দিক নির্দেশনাও ইতোমধ্যে দেয়া হয়েছে। ময়দানে মুসল্লিদের অবস্থানও জেলাওয়ারি নির্দিষ্ট খিত্তায় (ভাগে) বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম দফায় পুরো ময়দানকে ২৮টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে।

এবারের ইজতেমায় বিশ্বের শতাধিক দেশের প্রায় ২৫ হাজার বিদেশি মেহমান আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ৫০টি দেশের প্রায় ১২ হাজার বিদেশি মেহমান ময়দানে তাদের জন্য নির্ধারিত বিদেশি নিবাসে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। দেশি-বিদেশি ইসলামী চিন্তাবিদ ও ওলামায়ে কেরামগণ ছয় উসুল সম্পর্কে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামূলক মূল্যবান বয়ান রাখবেন। মূল বয়ান সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ভাষায় তরজমা করা হবে।

দুই পর্বে বিভক্ত হওয়া ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ১৯ জানুয়ারি। ২১ জানুয়ারি দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমা।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১২, ২০১৮)