নিউজ ডেস্ক : পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত সমাধান না হওয়া যত রহস্য আছে, তার মধ্যে অন্যতম হল এই আটলান্টিস। যিশুখ্রিস্টের জন্মের ৩৫৫ বছর আগে আটলান্টিসের কথা প্রথম জানিয়েছিলেন গ্রিক দার্শনিক প্লেটো।

আজ থেকে প্রায় দশ-বারো হাজার বছর আগে আটলান্টিক মহাসাগরের কাছে অবস্থিত এই দেশটিতে নাকি ছিল অত্যন্ত উন্নত এক সভ্যতা। অনেকের বিশ্বাস, গ্রিক দ্বীপ ক্রিটের কাছাকাছি ছিল আটলান্টিস। শোনা যায়, বিজ্ঞানে প্রচণ্ড উন্নত ছিল আটলান্টিস। ইঞ্জিনিয়াররা ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ। তাদের তৈরি বন্দর, প্রাসাদ, মন্দির, খাল এবং জাহাজ তৈরি বা মেরামতির ব্যবস্থা ইত্যাদিতে ছিল অত্যন্ত উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া। বিশেষ বিশেষ জায়গায় ঠাণ্ডা ও গরম জলের ঝরনার ব্যবস্থা ছিল।

প্লেটোর বয়ান অনুযায়ী এক ভয়ংকর ভূমিকম্প আর প্রবল জলোচ্ছ্বাসের ফলে এক রাতের মধ্যে আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে তলিয়ে যায় এ শহর। আটলান্টিস রহস্য ভেদ করার জন্য বহু বছর আগে থেকেই পণ্ডিত ও গবেষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে আটলান্টিস বলে কোনো দেশের আদৌ কোনো অস্তিত্ব ছিল না কোনোদিন। আবার অনেকে বিশ্বাস করেন সত্যিই পৃথিবীর বুকে একসময় ছিল অত্যন্ত উন্নত এই সভ্যতা। তবে আজ পর্যন্ত মেলেনি কোন তথ্য প্রমাণ।

তবে সম্প্রতি গবেষকেরা জানালেন একদম ভিন্ন একটি তথ্য! তাঁদের দাবী, হারানো আটলান্টিস খুঁজে পেয়েছেন তারা!

এই চাঞ্চল্যকর খবর দিয়েছেন আমেরিকার একটি রিসার্চ টিমের মুখ্য গবেষক, কানেকটিকাটের হার্টফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রিচার্ড ফ্রিয়ান্ড। তারা নাকি জানতে পেরেছেন হারিয়ে যাওয়া আটলান্টিসের সন্ধান! তিনটি দেশের গবেষকদের একটি দল মাটি ভেদ করতে পারে এরকম অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে স্পেনের ‘দোনানিয়া ন্যাশনাল পার্ক’-এর মাটির নিচে খুঁজে পেয়েছেন ক্যানাল সিস্টেমের প্রমাণ। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি দেখে তাদের ধারণা হয়েছে, এই ন্যাশনাল পার্কের বিস্তীর্ণ জলাভূমির নিচে চাপা পড়ে আছে একটা আস্ত শহর, আর সেটা যে রহস্যে ঘেরা আটলান্টিসই, তাতে কোনো সন্দেহ নেই তাদের। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে জার্মান পদার্থবিদ রাইনার কুন বলেছেন, যিশুখ্রিস্টের জন্মের ৮০০ থেকে ৫০০ বছর আগে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এই শহর। ফ্রিয়ান্ড বলেছেন, গবেষণা চলছে এবং খুব শিগগিরই হারিয়ে যাওয়া এ শহরের অস্তিত্বের যাবতীয় প্রমাণ পেশ করবেন তারা।

সত্যিই কি সমাধান হতে চলেছে আটলান্টিস রহস্য? হারিয়ে যাওয়া গার্ডেন অফ ইডেনের ধ্বংসাবশেষ কি শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাবে? যদি সত্যিই প্রাচীন এ সভ্যতার অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়, তাহলে তা হবে মহেঞ্জোদারো, হরপ্পা, মিশর, ব্যাবিলন ইত্যাদির সভ্যতার চেয়ে অনেক পুরনো। আর তখন যে পৃথিবীর ইতিহাস আবার নতুন করে লিখতে হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

(ওএস/এটিআর/জুলাই ০৪, ২০১৪)