স্টাফ রিপোর্টার : এক সময় পুঁজিবাজারে ফটকাবাজার বলে সমালোচনায় পড়লেও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সেই অবস্থান থেকে পুরোপুরি সরে এসেছেন। তিনি এখন মনে করেন ‘পুঁজিবাজার কোনো মতেই ফটকাবাজার নয়। যারা এমনটি মনে করেন তারা পুঁজিবাজারের শত্রু।’

শনিবার সিলেটে ‘বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা কনফারেন্স এবং বিনিয়োগ শিক্ষা মেলা ২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।

২০১০ সালে ধসের পর পুঁজিবাজারকে ফটকাবাজার বলেছিলেন মুহিত। আর সে সময় তার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনেও নেমেছিলেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা।

২০১০ সালের ধসের পর বিদায়ী ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। এক বছরে মূল্য সূচক বেড়েছে দেড় হাজার পয়েন্টের বেশি। সেই সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে বিনিয়োগাকারীদের মধ্যে।

তবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার সাত বছরে পুঁজিবাজারের ভিত্তি মজবুত করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন বিশ্বের প্রথম শ্রেণির শেয়ার বাজার হিসেবে স্বীকৃত।’

মুহিত বলেন, ‘এখন পুঁজিবাজার বিকাশের সময়। আইপিও বৃদ্ধির মাধ্যমে পুঁজিবাজার ব্যাপক প্রসার লাভ করবে, ফলে শিল্প ও বিনিয়োগ খাতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ও আর্থিক সক্ষমতাও বাড়বে।’

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাগ্যের ওপর ভরসা না করে পড়াশোনা ও গবেষণা করে বিনিয়োগ করতে বিনিয়োগকারীদের আহবান জানান অর্থমন্ত্রী।

২০১০ সালে ধসের পর গত সাত বছরে পুঁজিবাজারে বেশ কিছু আইনি সংস্কার হয়েছে। মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক হয়েছে। তবে বাজারে কারসাজির অভিযোগ এখনও রয়ে গেছে। গত কয়েক মাসে লোকসানি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা এর পেছনে কারসাজি আছে কি না তা খুঁজে বের করে কাউকে শাস্তি দিতে পারেনি।

আবার ২০১০ সালে পুঁবিজাবারে ধসের ঘটনায় ইব্রাহীম খালেদের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া যায়নি।

অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সাথে জড়িতদের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনেকগুলো মামলাও চলমান রয়েছে। তবে তাদের শাস্তি প্রদান সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সময়মতো সবার বিচার সম্পন্ন হবে।’

শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না- এটা ভুল ধারণা বলেও মনে করেন অর্থমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-এসইসির চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন, কমিশনের কমিশনার মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী, স্বপন কুমার বালা ও খন্দকার কামালুজ্জামান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান একে আবুল মোমেন, মো.আমজাদ হোসেন প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২০, ২০১৮)