আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় প্রভাব দেখিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মিন্টু মিয়ার শ্বশুর স্থানীয় প্রভাবশালী আ. রশিদ খানের বিরুদ্ধে।

পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন কালে পাউবোর পক্ষ থেকে মামলা করতে চাইলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ অবৈধ ড্রেজার জব্দ না করে উপয়ন্তু মামলা করতে এমপির নির্দেশ লাগবে! জানিয়ে ফিরে এসছে। দখলদারের বিরুদ্ধে পাউবো’র মামলার প্রস্তুতি চলছে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৩নং বাগধা ইউনিয়নের বাগধা মৌজায় নদীর পশ্চিম পাড়ে পাউবো’র ৫০শতক জায়গা পাশ্ববর্তি সুগন্ধা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ভরাট করে দখলে নিয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিন্টু মিয়ার চাচা শ্বশুর স্থানীয় প্রভাবশালী আ. রশিদ খান।

দখলদার রশিদ খান গত কয়েকদিন যাবত অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে জায়গা ভরাট করে আসলেও পুলিশ প্রশাসন ছিল নির্বিকার। খবর পেয়ে বরিশাল পাউবো’র গৌরনদী সার্কেল উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ইরফান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান ও করিম আলী, ও সার্ভেয়ার ফরিদ উদ্দিন বৃহস্পতিবার (১৮জানুয়ারি) ঘটনাস্থাল পরিদর্শন করেন। এসময় তারা অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে অবৈধভাবে তাদের জায়গা ভরাট করতে দেখে থানায় খবর দেয়।

খবর পেয়ে এসআই মিজানুর রহমানসহ পুলিশ ঘটনাস্থালে যায়। এসময় পাউবো’র কর্মকর্তারা স্থানীয়দের সামনে মামলা করবেন বলে পুলিশকে জানিয়ে অবৈধ ড্রেজার জব্দ করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন। এসআই মিজানুর রহমান অবৈধ ড্রেজার জব্দ না করে উপয়ন্তু স্থানীয় এমপি’র শুপারিশ ছাড়া মামলা করা যাবে না মর্মে পাউবো’র উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেন।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, এমপি’র শুপারিশে থানায় কোন মামলা হওয়া বা না হওয়ার কোন নজির এখনও পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশ অজ্ঞাত কারনে অবৈধ ড্রেজার জব্দ না করে ফিরে আসেন। পুলিশের এহেন কাজে পাউবো ও স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানান পাউবো’র কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান জানান, জায়গাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। অবৈধভাবে সরকারের জমি বালু দিয়ে ভরাট করতে দেখে তিনি পুলিশকে খবর দিলেও পুলিশ এসে অবৈধ ড্রেজার জব্দ না করে অজ্ঞাত কারণে ফিরে যায়। দখলদার তারে দাবির স্বপক্ষে কোন কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি। বিষয়টি স্থানীয় এমপি’র এপিএসকে জানানো হয়েছে। দখলদারে বিরুদ্ধে পাউবো’র মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

এসআই মিজজানুর রহমান ‘এমপি’র শুপারিশ ছাড়া মামলা করা যাবে না’ একথা অস্বীকার করেন।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা জানান, দখলদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে তিনি মামলা নেবেন।

এ ব্যাপারে দখলদার আ. রশিদ খান সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় রানা গাইন ও তার শরীকদের কাছ থেকে ২০১৫ সালে এসএ খতিয়ান নং-৩৮, এসএদাগ নং-৬১৩৭ ও ৬১৬৭ থেকে ৫৮শতক জায়গা তার ছেলে মনিরের নামে ক্রয় করেছেন। বর্তমান জরিপেও তারা ওই দলিলের ৪৩ শতক জায়গা রের্কড করেছেন।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ২০, ২০১৮)