শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : উত্তরের শস্য ভান্ডার দিনাজপুরে  সর্বনিন্ম তাপমাত্রা, ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহে কোল্ড ইনজুরী ছত্রাকে আক্রান্ত হয়ে বোরো বীজতলা বিনষ্ট হচ্ছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহ থেকে বীজতলা বাঁচাতে এবং অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে রোরো চাষাবাদ করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। 

জমি চাষ, তৈরি,বোরো বীজ তোলা ও বোনার কাজে এখন ব্যস্ত দিনাজপুরে কৃষক। দিনাজপুরে তীব্র শীতে ইরি-বোরো চারা মরে যাচ্ছে। দিনাজপুরে এবার বারো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮’শ৭৯ হেক্টর জমিতে।

এর মধ্যে দিনাজপুর সদরে ৫৭ হাজার ৭’শ ৮৮ হেক্টর, বীরগঞ্জে ১৪ হাজার ৯’শ ৫৫ হেক্টর, কাহারোলে ৫হাজার ৭’শ ৫৮ হেক্টর, খানসামায় ৪ হাজার ৫’শ ৬৫ হেক্টর, চিরিরবন্দরে ১৮ হাজার ৭’শ ৪ হেক্টর, বোচাগঞ্জে ৯ হাজার ২’শ ৫৫ হেক্টও, বিরলে ১৩ হাজার ৩’শ ৬৪ হেক্টর, পার্বতীপুরে ২৪ হাজার ৩’শ ৫০ হেক্টর, ফুলবাড়ীতে ১৪ হাজার ৫’শ ৮৫ হেক্টর, নবাবগঞ্জে ১ হাজার ৮’শ ৮০ হেক্টর, বিরামপুরে ১ হাজার ৬’শ ৪০ হেক্টর, হাকিমপুরে ৭ হাজার ৫’শ হেক্টর ও ঘোড়াঘাটে ৯হাজার ৯’শ ৩৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বোরো বীজ তোলার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমি। কিন্তু সর্বনিন্ম তাপমাত্রা,ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহে বোরো বীজতলা বিনষ্ট হচ্ছে। কোল্ড ইনজুরী ছত্রাকে আক্রান্ত হয়ে হলদে ফ্যাকাতে ধারণ করেছে বোরো বীজতলা। এতে বোরো চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।

তীব্র শীতে রোপনকৃত রোরো বীজতলা নষ্ট হওয়ার কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন কৃষিবিদ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট রংপুর অঞ্চলের অফিস প্রধান ও প্রধান বৈজ্ঞনিক কর্মকর্তা ড.আবু বকর সিদ্দিক সরকার জানান,সময় মতো বোরো চাষ না করলে উৎপাদন কম হওয়ার আশংকাই বেশী।

তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা বলছেন, ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহ থেকে বীজতলা বাঁচাতে এবং অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে রোরো চাষাবাদ করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। আদর্শ বীজতলা এ জন্য রোপন করতে বলছেন তারা।

শুধু তাই নয়, প্রচন্ড হাড় কাপানো শীতে ক্ষেতে কাজ করতে পারছে না কৃষি শ্রমিক। ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে তারা।

প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশায় চলতি বোরো মৌসুমের বীজতোলা বিনষ্ট হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়েও কোন ফল পাচ্ছে না কৃষক। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে, চলতি বোরো মৌসূম ব্যাহত হওয়ার আশংকাই করছেন কৃষিবিদরা।

(এসএএস/এসপি/জানুয়ারি ২৬, ২০১৮)