মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : শুক্রবার সকাল থেকেই পুরো মাঠজুড়ে বিরাজ করছে ধর্মীয় ভাব গাম্ভির এক স্বর্গীয় পরিবেশ। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে মৌলভীবাজার শহরের উপকন্ঠে জগন্নাথপুর উপশহর এলাকায় শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বাদ ফজর শুরু হয় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত তাবলিগ জামাতের জেলা ইজতেমার দ্বিতীয় দিনের আনুষ্ঠানিকতা।

ইজতেমা এলাকার চারপাশের ঘনকোয়াশা উপেক্ষা করে কাকরাইল মসজিদের সিনিয়র মুরব্বি মাওলানা ফারুক এর বাদ ফজরের আমবয়ানের পর থেকেই ইজতেমা মাঠমুখি মুসল্লিদের পদভার বেড়ে যায়। লাখো মানুষের সাথে পবিত্র জুমার সালাত আদায় করে মহান প্রভুর দরবারে নিজেদের গোনাহ মাফের জন্য সোপর্দ করা। সময় বাড়ার সাথে সাথে জেলা পুলিশ প্রশাসনের দুই স্থরের ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মাঠমুখি মানুষের ভির বাড়তে থাকে। জুমার নামাজের এর পূর্বেই পুরো মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।

এদিন জেলার প্রত্যেক জামে মসজিদে জুমার নামাজের সময় দুপুর দেড়টায় হলেও ইজতেমা মাঠে জুমার নামাজ আরম্ভ হয় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের সময়। ইজতেমা মাঠে জুমার খুতবা ও নামাজ পড়ান কাকরাইল মসজিদের সিনিয়র মুরব্বি মাওলানা ফারুক। নামাজের পর সংক্ষিপ্ত মোনাজাত করে ইজতেমা মাঠে কাতারবন্দি হয়ে বাহির থেকে নিয়ে আসাএক ব্যাক্তির জানাজার নামাজে সরিক হন মুসল্লিরা। তবে এ ব্যাক্তির নাম পরিচয় জানাতে পারেননি তাবলিগ জামাতের দ্বায়িত্বশীল কোন সূত্র।

এদিকে জুমার নামাজ শেষে পুরো সড়কজুরে শুরু হয় তীব্র যানজট, ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের প্রানান্তর চেষ্ঠায় ঘন্টব্যাপী যানজট থেকে মুক্ত হয় ইজতেমা মাঠে নামাজ পড়তে আসা হাজার হাজার মুসল্লিরা।

গতকাল ২৫ জানুয়ারি লাখো মানুষের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে শুরু হয় মৌলভীবাজার জেলার ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় গণজমায়েত মৌলভীবাজার জেলা ইজতেমা।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বাদ ফজর ফিলিস্তিন থেকে আসা তাবলিগের মুরব্বি শেখ মোহাম্মদ ইয়াদ এর ২ঘন্টাব্যাপী আমবয়ানের মধ্যেদিয়ে শুরু হয় তিনদিন ব্যাপী এই গণজমায়েতের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম।

ইজতেমা মাঠের জিম্মাদার ময়নুল ইসলাম জানান, আগামী কাল সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে বাংলায় আধাঘন্টাব্যাপী আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে মৌলভীবাজারের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই গণজমাতের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। এর পর তাবলিগ অনুষারিরা দীনের দাওয়াতী কর্মকান্ড সর্বত্র পৌঁছে দিতে ছড়িয়ে পরবেন পুরো দেশব্যাপী।

এবার মৌলভীবাজার জেলা ইজতেমায় মধ্যেপ্রাচ্যের ফিলিস্তিন, আরবআমিরাত, মরোক্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন, মালেশিয়া সহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকেও এসেছে কয়েকটি জামাত।

ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সেবা দিতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সেবা কেন্দ্র চালু হলেও অনেক মুসল্লির অভিযোগ সেখানে গিয়ে খুব একটা সেবা পাচ্ছেন্না তারা।

বড়লেখা থেকে তাবলিগ এর এক অনুষারী আব্দুল মান্নান বলেন, গতকাল থেকে আমি শ্বাষকষ্টে ভুগছি তাই এখানে আসলেও প্যারাচিটামল আর নাপা ছাড়া আর তেমন কোন সেবা বা ঔষধ পাওয়া যাচ্ছেনা।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ২৬, ২০১৮)