স্টাফ রিপোর্টার : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রক্টরের কাছে অভিযোগপত্র দিয়ে বিচার চেয়েছেন দুই শিক্ষিকা। অন্যদিকে শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগপত্র দিয়ে প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেছেন এক শিক্ষার্থী।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় গাড়ি পার্কিংয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের এ ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগ পত্রে শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, শারীরিক লাঞ্ছনা ও হুমকির অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ ৪৩ ব্যাচের আরমানুল ইসলাম খান। অন্যদিকে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ‘লাঞ্ছনা’র অভিযোগ এনেছেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম খান এবং একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উম্মে সায়কা।

প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ওই দুই শিক্ষক। এ সময় শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় কয়েকজন শিক্ষার্থী রাস্তা থেকে গাড়িটি সরানোর জন্য গাড়ির ড্রাইভারকে বলেন। তখন নাহরিন ইসলাম খানের সাথে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে।

প্রক্টরের কাছে দেওয়া অভিযোগপত্রে আইন ও বিচার বিভাগ ৪৩ ব্যাচের আরমানুল ইসলাম খান উল্লেখ করেন, নাহরিন ইসলাম খান বটতলায় অবৈধভাবে গাড়ি রাখলে প্রথমে সেখানে নিয়োজিত গার্ড ও আনসাররা তাকে গাড়ি রাখতে নিষেধ করেন। তখন তিনি গার্ডের কথা না শুনে জোর করে গাড়িটি রাস্তায় রাখলে শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে ভেবে আমিসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে গাড়িটি সরিয়ে নিতে অনুরোধ করি। তিনি অনুরোধ না শুনে উল্টো আমাদের পরিচয় জানতে চান। আমরা পরিচয় দিয়ে তাকে আবার গাড়ি সরানোর অনুরোধ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ‘চড় দিয়ে দাঁত ফেলে’ দেবেন বলেন। সেসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গালি দেন এবং উচ্চস্বরে বলেন, আমি (নাহরিন ইসলাম খান) কোন বিভাগের শিক্ষক তা দেখাচ্ছি বলে দেখে নেওয়ার হুমকী দেন।

এমতাবস্থায় আমার সাথে এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ, শারীরিক লাঞ্ছনা এবং হুমকীর যথাযথ বিচার দাবি করছি।

এদিকে প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্রে ওই দুই শিক্ষিকা উল্লেখ করেন, আমি ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম খান এবং আমি একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. উম্মে সায়কা।
দুপুরের খাবারের জন্য বটতলায় যাই। সংস্কার কাজের কারণে রাস্তা বন্ধ থাকায় গাড়ীটি রাস্তার একপাশে রাখি। তখন আরমান নামের এক শিক্ষার্থী আমার ড্রাইভারের সাথে খারাপ ব্যাবহার করে, তখন আমি বলি গাড়িটি ১০ মিনিটের জন্য রাখা হয়েছে। তখন আরমান আমাদের সঙ্গেও খুবই উদ্ধত আচরণ করে। তখন আমি বলি, আমি একজন শিক্ষক, তুমি আমার সাথে এইভাবে কথা বলতে পারো না। পরবর্তীতে সানাউল নামে অন্য এক ছাত্র এসে আমাকে বলে তুই কোথাকার কে, তারপর সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এরপর আরো কিছু ছাত্র এসে আমাদেরকে ঘিরে ফেলে। পরবর্তীতে কিছু ছাত্র এবং সহকারী প্রক্টর ও নিরাপত্তা অফিসার এসে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘দুইজন শিক্ষক এবং এক শিক্ষার্থীর অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। শনিবার প্রক্টরিয়াল বডির বৈঠকে ঘটনা তদন্ত করে আলোচনা সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

(টি/এসপি/জানুয়ারি ২৭, ২০১৮)