স্টাফ রিপোর্টার :  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, যারা মাদ্রাসায় পড়ে তারা মনেপ্রাণে ইসলামকে ধারণ করবে। তারা কখনও জঙ্গি হতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু হতে পারে। তারা জঙ্গিবাদকে কখনও মেনে নেবে না।

শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের এক সমাবেশে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মাদ্রাসা শিক্ষাকে জাতীয়করণের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

এ সময় মন্ত্রী মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া ছাড়াও জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে কথা বলেন।

বাংলাদেশে ১৯৯০ দশকে জঙ্গি তৎপরতা শুরুর থেকেই কওমি মাদ্রাসা পড়ুয়ারাই এর নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন বলে প্রমাণ আছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন ধরনের জঙ্গি তৎপরতায় আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত উচ্চবিত্ত শ্রেণির ছেলেমেয়েদেরও জঙ্গি তৎপরতায় জড়ানোর প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

গত ১২ মার্চ রাজধানীতে ১৪ দেশের পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সম্মেলনের প্রথম দিন পুলিশের পক্ষ থেকে উপস্থাপন করা ‘বাংলাদেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থান’ শীর্ষক প্রবন্ধে দেশে জঙ্গিবাদের স্বরূপ উন্মোচনের চেষ্টা করা হয়েছে।

জঙ্গি নির্মূলে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সেদিন বলেন, ‘বাংলাদেশে ১৯৯০ দশক থেকেও জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা শুরু। গত বছর পর্যন্ত জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে আটকদের বেশিরভাগই কওমি মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী। বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে এ নিয়ে মাদ্রাসাগুলোতে নজরদারির দাবি উঠে। তবে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে বরাবর বলা হয়েছে, তারা ইসলামের দীক্ষা দেন, জঙ্গিবাদের নয়।’

মনিরুল আরও বলেন, ‘অভিজাত শ্রেণির সন্তানদের অর্থের প্রাচুর্যের কারণে তারা বিদেশি ও পশ্চিমা বিশ্বের সমাজকে অনুকরণ করছে। তারা দেশি সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকছে। এ সুযোগে জঙ্গিবার তাদের প্রভাবিত করে বিপথে ফেলে। আর অতিদরিদ্ররা সুযোগ নিয়েও নিজেদের পথে নিয়ে যায় জঙ্গিরা।’

তবে আজকের সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মাদ্রাসায় পড়ে তারা তারা কখনও জঙ্গি হতে পারেন না। যারা মনে প্রাণে ইসলামকে ধারণ করেন তারা কখনও জঙ্গি হতে পারেন না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু, ধর্মান্ধ নয়। তারা জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে না। তারা খাঁটি মুসলমান। আর আমরা মুসলিম দেখেই আমাদের উপর জঙ্গিবাদের কালি মাখানোরর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।’

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নামাজি মানুষ। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরেন, তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন। ভোরে কোরআন তেলাওয়াত করে দৈনিক কাজ শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী আলেমদের জন্য যা করার দরকার তিনি তাই করেছেন। তিনি কওমী মাদ্রাসাকে স্বীকৃত করেছেন। আপনাদের দাবি বড় দাবি নয়।’

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে নমনীয় হবেন বলে বিশ্বাস করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষামন্ত্রী আপনাদের সব দাবির কথা শুনবেন। তিনি আপনাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবেন।’

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৭, ২০১৮)