ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, গত ২৩ জানুয়ারি উপাচার্যের কার্যালয়ে সংঘটিত ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যর্থ প্রমাণের ষড়যন্ত্রের অংশ।

রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাবি শিক্ষক সমিতি আয়োজিত এক মানববন্ধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনে উপাচার্যের সঙ্গে অশোভন আচরণ, উপাচার্য ও প্রক্টরের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে ঘটনার প্রতিবাদে এ মানববন্ধন করা হয়।

২৩ জানুয়ারি চার দফা দাবিতে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দে’র ব্যানারে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করে। প্রশাসনিক ভবনের ৩টি গেট ভেঙে উপাচার্যের কক্ষের সামনে পৌঁছে আন্দোলনকারীরা প্রায় ৫ ঘণ্টা উপাচার্য ও প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে বিকেলের দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ভিসিকে ‘উদ্ধার’ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

আজকের মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক মো. সামাদ, অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া, অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমান, অধ্যাপক ড. জিয়াউর রহমান, অধ্যাপক জিনাত হুদা, অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান মিয়াজী, আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন প্রমুখ।

সেদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে কেন ডাকা হয়নি? এমন প্রশ্নের উত্তরে মাকসুদ কামাল বলেন, ক্যাম্পাসের কালচার হলো পুলিশ আসলে তখন স্লোগান দেবে- ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব দাও। এ জন্য শিক্ষক-ছাত্র মিলে আমরা সমাধান করেছি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বহিরাগতদের চিহ্নিত করে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, দাবি থাকলে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু বেপরোয়া যে মনোভাব, তাতে ধারণা করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করা হচ্ছে ভেতর থেকে। আমরা এই ষড়যন্ত্রকে রাজনৈতিক ফায়দার অংশ মনে করি। তাই আমরা এটাকে বাস্তবায়ন হতে দেব না।

অধ্যাপক কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, দাবি-দাওয়া নিয়ে স্মারকলিপি দিতে বলা হয়েছে। আমরা তাদের বলেছিলাম, আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে। কিন্তু ছাত্রদের মধ্যে থেকে কোনো প্রতিনিধি আসেনি। তাদের দাবি ছিল উপাচার্যকে তাদের সামনে এসে দাবির ব্যাপারে ঘোষণা দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি নিয়মনীতির মধ্যে দিয়ে চলতে হয়। ছাত্র কিংবা বহিরাগত যারা ধ্বংসাত্মক কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ১৫ জানুয়ারি নিপীড়নের যে অভিযোগ এসেছে সেটির ভিডিও ফুটেজ আমরা দেখেছি। যদি এমন হয়ে থাকে সেটিরও আমরা প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু সে ঘটনার বিচার করতে হলে তদন্ত কমিটিকে অভিযোগকারীদের সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু আমরা এখনও পর্যন্ত সে ধরনের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০১৮)