টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের সাবালিয়া এলাকায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীর বিপরীতে  দয়াল ডায়াগনস্টিক এন্ড হসপিটালের সামনের সরকারি জায়গা দখল করে চলছে ব্যবসার প্রস্তুতি। দখলকৃত জায়গায় স্থাপনা তৈরি করতে চলছে সংস্কারের কাজ। জানা যায় প্রভাবশালী ওই দখলবাজদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায়না।

সরকারি জায়গা দখল করে মাটি ভরাট করা ও পাকাপোক্তভাবে ঢালাই করে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠায়, ০২ জুলাই বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর অপরপাশে দয়াল ডায়াগনষ্টিক এন্ড হসপিটাল এর সামনে সরকারি জায়গার বিশাল অংশ জুড়ে ঢালাইয়ের কাজ চলছে। এক সময় ওই জায়গাটি ছিল পানি নিষ্কাশনের খাল। বর্তমানে তা মাটি দিয়ে ভরাট করে স্থায়ীভাবে সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা হচ্ছে। এসকল দখলবাজ ব্যবসায়ীদের জন্য শহরের নূন্যতম পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। একদিকে জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ সম্মিলিতভাবে টাঙ্গাইলের সৌন্দর্য রক্ষায় সরকারি জায়গাগুলোকে অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য কাজ করছে। অপরদিকে সাবালিয়ার মত বিভিন্ন জায়গায় এরকম ভূমিদস্যুরা সরকারি জমি অবাধে দখল করতে ব্যস্ত সময় পার করছে।
টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে সাবালিয়ায় সড়ক বিভাগের যে জায়গাটি ঢালাই করা হচ্ছে, সেখানে প্রায় আধাঘন্টা অবস্থানকালে দেখা যায়, ঢালাইয়ের কাজ তদারকী করছে পাশের একটি মার্কেটের মালিক নুরুজ্জামান এর ছেলে ব্যবসায়ী বুলবুল ও দয়াল ডায়াগনষ্টিক এন্ড হসপিটালের মালিক নূর কুতুবুল আলম পিয়ারা। এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা গর্বের সাথে বলেন, এলাকার দু একজন Ÿাধা দিতে আসছিল, এমন ব্যবস্থা করছি যে, তারা ভয়ে ভাগছে। কত ব্যাগ সিমেন্ট লাগল জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রায় একশত ব্যাগ সিমেন্ট লাগছে। কাজ শেষ হইতে আরো কয়েক ব্যাগ লাগতে পারে। সরকারি জায়গায় ঢালাইয়ের ব্যাপারে বলেন, মৌখিক ভাবে গণপূর্তের একজন প্রকৌশলীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে গণপূর্ত বিভাগে যোগাযোগ করা হলে কর্তব্যরত এক উপ-সহকারি প্রকৌশলী জানান, ওই জায়গার মালিকানা সড়ক বিভাগের। জায়গাটি সড়ক বিভাগের অথচ দখলদাররা জানান গণপূর্ত থেকে অনুমতি নিয়েছেন।
সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আর পি বড়ুয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সড়ক বিভাগের জায়গা দখল করার বিষয়টি তার জানা নেই। তবে একই দপ্তরের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোহাম্মদ মহসীন মোল্লা বলেন, গত কয়েকদিন আগে ওই দিক দিয়ে আসার সময়, বিষয়টি আমি লক্ষ্য করেছি এবং তাদেরকে মৌখিকভাবে কাজ করতে নিষেধ করেছি। এ ধরণের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে ইতিপূর্বে সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিট্রেট চেয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কবে নাগাদ ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি।
এরপর ০৫ জুলাই শনিবার সরেজমিনে গিয়ে আবারো দেখা যায়, অবৈধভাবে দখলকৃত জায়গায় ঢালাইয়ের উপর ফিনিশিং টাচ দেয়া হচ্ছে ও রং করা হচ্ছে।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ ধরণের অবৈধ দখলবাজদের বিরুদ্ধে সময় থাকতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটাই আশা করছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
(আরকেএম/এএস/জুলাই ০৬, ২০১৪)