জোটন চন্দ্র ঘোষ, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) : হালুয়াঘাটে স্বল্প টাকায় অধিক মুনাফা হওয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে প্যাথলজি বাণিজ্য। উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল থেকে শুরু করে পৌর শহরে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে প্যাথলজি ব্যবসায়ী । বিভিন্ন পরিক্ষার নামে কতিপয় ডাক্তারদের সহযোগিতায় সেবার নামে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা আংকের অর্থ।

অত্র উপজেলায় মুখরোচক ডিজিটাল মাইকিং করে ময়মনসিংহ থেকে আগত এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর একাধিক ডাক্তারের নামকরণ করে। পাশাপাশি অনেক প্যাথলজিতে সর্ব সাধারনের চোখে পড়ার মত দৃষ্টি নন্ধন স্থানে টানানো হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ডাক্তারদের নাম সম্বলিত পোষ্টার ও ব্যানার। সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার আপামর জনসাধারণ।

জানা যায়, অত্র উপজেলায় প্রায় ২৭ টি প্যাথলজি ও ক্লিনিক রয়েছে। এর অধিকাংশের নেই সরকারি অনুমোদন, নেই প্রশিক্ষিত ল্যাব টেকনিশিয়ান। ডাক্তারদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের উপযুক্ত স্থান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এ সমস্ত প্যাথলজি। বিনিময়ে কতিপয় কিছু ডাক্তার প্যাথলজি মালিকদের সহযোগিতা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন অর্থ এবং আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন কতিপয় প্যাথলজি ব্যবসায়ীগণ। বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষার পার্সেন্টিজ, রোগীদের কাছ থেকে ডাক্তার ফি বাবদ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কোথাও এর চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে।

যে সমস্ত পরীক্ষার ফি আদায় করা হয় তারমধ্যে অন্যতম ইসিজি-২৫০ থেকে ১০০০ টাকা, আলট্রাসনোগ্রাম- ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, সিবিসি-২৫০ টাকা উয়ডাল টেস্ট ২০০ টাকা, এইচবিএসএজি-৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ফি হিসেবে আদায় করা হচ্ছে। যদিও কোন প্যাথলজিতে হার্ড স্পেশালিস্ট নেই, অধিকাংশেই রয়েছে ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ান আবার কোথাও ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানও নেই।

সেবা নিতে আসা একাধিক অসুস্থ ব্যক্তির স্বজনরা জানান, ডাক্তারদের নিকট যাওয়া মাত্রই বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার জন্য কাগজ টুকে দেন এবং তাদের মনোনীত প্যাথলজি ও ডায়গোনোষ্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করার জন্য বলে দেন। অনেক সময় এ সমস্ত পরীক্ষার কাগজপত্রাদি ময়মনসিংহ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দেখানো হলে পূনরায় পরীক্ষা করাতে হবে বলে তারা জানান।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এম.এ কাদের বলেন, স্বল্প টাকায় অধিক মুনাফা হওয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে প্যাথলজি বাণিজ্য। অবৈধ প্যাথলজিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে হবে। অবৈধ তালিকায় যাদেরকে পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন এ প্রতিবেদক কে জানায়, বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে ইতিমধ্যে কথা বলেছেন, প্যাথলজি ও ডায়গোনোষ্টিক সেন্টার গুলির তালিকা প্রণয়নের জন্য অবহিত করেছেন। অবৈধ প্যাথলজি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

(জেসিজি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৮)