মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর শহরের সৈদারবালী টিবি ক্লিনিক এলাকায় হায়দার কাজী জুট মিলে আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিটের চেষ্টায় প্রায় ২২ ঘন্টা পর মঙ্গলবার দুপুর  ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করতে হবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত। অগ্নিকাণ্ডে কত কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করা এখনো সম্ভব হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষের ধারণা ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মিল কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে কাজী হায়দার জুট মিলের মেশিন রুমের ভিতর থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়ে মুহূর্তের মধ্যে পার্শ্ববর্তী বিল্ডিংসহ পাটের গোডাউনে আগুন ছড়িয়ে পরে।

এ সময় শ্রমিকরা আর্তচিৎকার করতে করতে দৌড়ে মিল থেকে বেরিয়ে আসে। মিলের তিনটি পাটের গোডাউনে প্রায় তিন লাখ মণ পাট মজুত ছিল। মিলটিতে প্রায় ৮ শতাধিক শ্রমিক কাজ করতো।
আগুন লাগার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনের বিভিন্ন ধরণের লোকজন।

জুট মিলের পরিচালক সাত্তার কাজী বলেন, চার বছর ধরে সুন্দরভাবে মিলটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। সোমবার বিকেলে মিলটি চালু অবস্থায় জুট গোডাউনের পাশের মেশিন থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আমরা প্রথমে নিজেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলাম। পরবর্তীতে আগুনের ভয়াবহতা বেড়ে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে। আমাদের জুট গোডাউনে প্রায় ২ লাখ মণ পাট ছিল। যা বাৎসরিক মজুদ। এখন আমাদের উৎপাদনে যাওয়ার মত ক্ষমতা নেই। আগুনের কারণে আমাদের মিলের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জানিনা এ ক্ষতি পুসিয়ে কিভাবে মিল চালু করবো।

মিল পরিদর্শনে এসে মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র মো. খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, জুটমিলের অগ্নিকান্ডটি খুবই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাদারীপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। শহরের পাশে মিলটি গড়ে ওঠায় বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছিল। আমি আশা করি ব্যাংকের সহযোগিতা, মালিকের উদ্যোগ ও সরকারের সহযোগিতায় মিলটি পুনরায় চালু হবে। পুনরায় এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের সহকারী পরিচালক এ.বি.এম মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগুন লাগার কথা শুনে আমি সাথে সাথেই ফরিদপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট নিয়ে এখানে চলে আসি। শুরুর দিকে আগুনের ভয়াবহতা খুবই বেশী পরিমাণে ছিল। সময় যত যাচ্ছে আগুনের প্রকপ আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে।

বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলসহ গৌরনদীর ভায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিটসহ মোট ৭টি ইউনিট দিয়ে প্রায় ২২ ঘন্টা ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। মিলের ভিতরে পাটের কয়েকটি গোডাউনে বড় বড় গাউডে আগুন লেগেছে তাই নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগছে। আশা করি রাতের মধ্যেই আগুণ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। আগুন সম্পূর্ণ নিভানোর পরে তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে।


(এএসএ/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৮)