স্টাফ রির্পোটার : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা প্রতিবেদনে যেসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তার সত্যতা প্রমাণ করতে না পারলে ক্ষমা চাইতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

রবিবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে যে রিপোর্টটি দেয়া হয়েছে, আমি ওই গবেষকের দৃষ্টিতে বলতে চাই ওটা সঠিকভাবে হয়নি। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় যারা ইতোমধ্যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, যারা বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে পারবে না এবং যারা ঘুষ-দুর্নীতি, অন্যায় এবং সার্টিফিকেট বিক্রি করে। আমরা সেগুলোকে বাতিল করে দেবো।

তিনি বলেন, আমরা যে লড়াই করছি সেই লড়াই আপনাদের শক্তিতে করছি। এই যে তারা কোনো গবেষণায় পেলেন না, সমস্ত বিষয়বস্তুর বাইরে গিয়ে আমাদের দেশের মধ্যে একটি খুবই সম্ভাবনাময় বড় খাতকে (শিক্ষা) এই রকম একটা বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দেয়াটা আমরা মেনে নিতে পারি না। তাদেরকে হয় এটা প্রমাণ করতে হবে আর না হয় এটা প্রত্যাহার করতে হবে। পার্লামেন্টে আমি বলেছি জাতির কাছে ক্ষমাও চাইতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। এতে অন্তত ৬০ ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি, ১১ খাতে ঘুষ বাণিজ্য, সনদ বাণিজ্যসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। টিআইবির এ প্রতিবেদন সরাসরি প্রত্যাখ্যান না করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, প্রতিবেদনটি অসত্য। তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ ছাড়া ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

৩০ জুন টিআইবি বাংলাদেশের ৭৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষার সনদপত্র কেনা যায়। আর শিক্ষার্থীদের পাস করিয়ে দেয়া এবং নম্বর বাড়িয়ে দেয়ার জন্য উপহার ছাড়াও নগদ অর্থের লেনদেন হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মঞ্জুরি কমিশন থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বিভাগ, বিষয় এবং শিক্ষক নিয়োগসহ নানা বিষয় অনুমোদন করাতে অর্থের লেনদেন হয়। টিআইবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ অনুমোদনের জন্য ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিদর্শন বাবদ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ১০ থেকে ৫০ হাজার, অনুষদ অনুমোদনের জন্য ১০ থেকে ৩০ হাজার, বিভাগ অনুমোদনের জন্য ১০ থেকে ২০ হাজার, পাঠ্যক্রম অনুমোদন ও দ্রুত অনুমোদনের জন্য ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা লেনদেন হয় এবং নিরীক্ষা করানোর জন্য ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা লেনদেন করতে হয়। প্রতিবেদনে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

(ওএস/এএস/জুলাই ০৬, ২০১৪)